shono
Advertisement

Breaking News

অ্যালার্জি হলেই সাবধান! পিঁপড়ের কামড়ও ডেকে আনতে পারে মৃত্যু

অ্যানাফ্যাইল্যাক্সিস সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। The post অ্যালার্জি হলেই সাবধান! পিঁপড়ের কামড়ও ডেকে আনতে পারে মৃত্যু appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:58 PM Nov 25, 2019Updated: 03:58 PM Nov 25, 2019

গৌতম ব্রহ্ম: অ্যানাফাইল্যাক্টিক শক। ‘ডেঙ্গু শক’-এর উপরি হিসেবে নতুন শক-আতঙ্ক জুড়ল অজানা পোকার কামড়! ডাক্তাররাও জানিয়ে দিলেন, এই অ্যানাফাইল্যাক্টিক শকের জন্য একটি পিঁপড়ের কামড়ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে!

গত বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুরের বৈদ্যবাটির গৃহবধূ সুদীপা নন্দীর মৃত্যু হয় এসএসকেএমে। স্নানঘরে ওঁর হাতে একটা অজানা পোকা কামড়েছিল। দংশনস্থল তো বটেই, যে হাত দিয়ে দংশনস্থল চুলকেছিলেন, সে হাতও নীল হয়ে যায়, এতটাই ভয়ংকর সে বিষ। আটদিনের চিকিৎসাও বাঁচাতে পারেনি বত্রিশ বছরের যুবতীকে।

Advertisement

ব্লিস্টার বিটল, ট্যারান্টুলা, নেফিলা, না কাঁকড়াবিছে? সুদীপাকে কী পোকা কামড়েছিল, তা এখনও নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। কী বিষ, তার উপরেও আলোকপাত হয়নি। কিন্তু পোকা-আতঙ্ক শুরু হয়েছে বৈদ্যবাটিজুড়ে। জেলা ছাড়িয়ে শহরেও সংক্রমিত হয়েছে অজানা পতঙ্গের ত্রাস। চিকিৎসকরা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, ভয়ের কোনও কারণ নেই। ব্যক্তিবিশেষে একটি মৌমাছির হুলও প্রাণঘাতী হতে পারে। কারণ, সমস্যা পোকায় নয়, সেই ব্যক্তির শরীরের রাসায়নিক গঠনে। একই মাকড়সা পাঁচজনকে কামড়াল। চারজনের কিছু হল না। কিন্তু পঞ্চমজনের মৃত্যু হতেই পারে। বিষের মোকাবিলা করতে গিয়ে শরীর থেকে নির্গত হিস্টামিন রাসায়নিক তাঁর বাকি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজকর্ম বিকল করে দিতে পারে। অন্যদের ক্ষেত্রে যা হয়নি। সুদীপার ক্ষেত্রে এমনটাই হয়েছিল বলে চিকিৎসকদের একাংশের প্রাথমিক অনুমান।

[আরও পড়ুন: সাবধান! অন্তর্বাসের ভাঁজেই বাসা বাঁধছে মারণ পতঙ্গ ‘ট্রম্বিকুলিড মাইট’]

হুগলিতেই কিছুদিন আগে ট্যারান্টুলার কামড়ে মৃত্যুর খবর এসেছিল। গঙ্গার পাড়ে প্রচুর আটপেয়ের বাস। পুরুলিয়ায় বিষাক্ত নেফিলা প্রজাতির মাকড়সা রয়েছে। ভাতাড়ে গুবড়ে পোকার কামড়ে এক রোগীর প্রাণসংশয় হয়েছিল কিছুদিন আগে। তা নিয়েও কম চর্চা হয়নি ডাক্তার মহলে। এমনটাই জানালেন সাপে কাটা রোগের চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ ডা. দয়াবন্ধু মজুমদার। পোকা বিশেষজ্ঞদের মত, ভারতে যে ধরনের মাকড়সা দেখা যায় তারা কেউই প্রাণঘাতী নয়। তবে অ্যানাফাইল্যাক্সিস হলে মৃত্যু হতেই পারে। আর জি কর হাসপাতালের ‘রিজিওনাল পয়জন সেন্টার’-এর প্রধান ডা. সোমনাথ দাস জানালেন, লাল রঙের গাছপিঁপড়ের কামড়ে মৃত্যুর নজির রয়েছে। মৌমাছির কামড়েও প্রাণ গিয়েছে। “সুতরাং এক্ষেত্রে পোকা নিয়ে দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই। বরং অ্যানাফ্যাইল্যাক্সিস সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বুঝতে হবে, অ্যানাফ্যাইল্যাক্সিসের কারণে পিঁপড়েও প্রাণ কাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যান্টি হিস্টামিন, অ্যাড্রিনালিন এবং স্টেরয়েড দিতে হবে।” বলছেন তিনি।
সোমনাথবাবুর পর্যবেক্ষণ, “আমাদের হেল্পলাইনে পিঁপড়ের কামড় খেয়ে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়া এমন অনেক রোগীর ফোন আসে। কোনও খাবার থেকেও সমস্যা হতে পারে।”

একই বক্তব্য ডা. শুভেন্দু বাগের। মাকড়সার কামড় খাওয়া অনেক রোগীর চিকিৎসা করেছেন শুভেন্দুবাবু। অ্যানাফাল্যাক্সিসের শিকার অনেক রোগীকেও সারিয়েছেন। তাঁর কথায়, “অ্যানাফাইল্যাক্সিস এক ধরনের অ্যালার্জি। ল্যারিংগাল ইডিমার কারণে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে সঙ্গে সঙ্গে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। আবার মাল্টিঅর্গান ফেলিওর হয়ে মৃত্যু আসতে পারে ধীরে ধীরে।”

ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভেন্দুবাবু জানাচ্ছেন, অপরিচিত কোনও বিষ বা প্রোটিন ঢুকলে শরীর হিস্টামিন নামে এক ধরনের অর্গানিক নাইট্রোজেনাস যৌগ উৎপাদন করে। যা অনেকের শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। সাপে কাটা রোগীকে এভিএস দিলে তার থেকেও অ্যানাফাইল্যাক্সিস হতে পারে। চিংড়ি বা কাঁকড়া খেলে, ডিম খেলেও হতে পারে। কাঁকড়াবিছে, তেঁতুলবিছের দংশনও প্রাণঘাতী হতে পারে।

[আরও পড়ুন: সিগারেটে কালো ফুসফুস, দান করা অঙ্গ ফেরালেন চিকিৎসকরা]

কয়েক বছর আগে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এক হাউসস্টাফের কাঁকড়া খেয়ে বিপন্ন হয়েছিল জীবন। সময়মতো আড্রিনালিন ইঞ্জেকশন না দিলে সেই চিকিৎসককে বাঁচানোই মুশকিল হত। স্ক্র্যাব টাইফাইসের ক্ষেত্রেও এক জাতীয় পোকাই দায়ি। তবে সুদীপার ক্ষেত্রে স্ক্র‌্যাব টাইফাসের কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। ট্যারানটুলার কামড় অবশ্য হতেই পারে। শুভেন্দু আরও জানালেন, পার্থেনিয়াম গাছ কাটতে গিয়ে ডেবরায় এক রোগীর প্রাণসংশয় হয়েছিল। প্রচুর শ্বাসকষ্ট হয়েছিল। অ্যাড্রিনালিন দিয়ে বাঁচানো হয়েছিল। ডিম খেয়ে একটি বাচ্চার সংকটজনক অবস্থা হয়েছিল।

The post অ্যালার্জি হলেই সাবধান! পিঁপড়ের কামড়ও ডেকে আনতে পারে মৃত্যু appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement