সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়, দুর্গাপুর: নিজের সন্তান নয়, এই সন্দেহে আটমাসের শিশুপুত্রকে খুন করার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে ইতিমধ্য়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডালের বহুলা মতিবাজার নিউ কোয়ার্টার এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে ঘুমন্ত অবস্থায় সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান অভিযুক্ত অজয় ভুঁইয়া। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে পরিত্যক্ত কয়লা খনির সামনে তাদের দেখতে পান অজয়ের মা। সন্তানকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছে জিজ্ঞেস করতেই অভিযুক্ত মাকে ধাক্কা মেরে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। অভিযোগ, পরিত্যক্ত খাদানের কাছে নিয়ে পাথর দিয়ে একের পর এক আঘাত করা হয় শিশুটির মুখে। তার পর তাকে ফেলে চলে যান অজয়।
[আরও পড়ুন: বিধানসভায় জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ, শুভেন্দুদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ স্পিকারের?]
কিছুক্ষণ পর পরিত্যক্ত খনির ঝোপের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় খুদেকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। চিকিৎসার জন্য রানিগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অজয়ই ছেলেটিকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী মমতা ভুঁইয়া। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সন্দেহের বসেই এই খুন বলে প্রাথমিক অনুমান তদন্তকারীদের।
কিন্তু কেন বাবা নিজের ছেলেকে খুন করল?
ঘটনা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পর থেকেই অজয় তাঁর স্ত্রী মমতাকে সন্দেহ করতেন। সন্তানের জন্মের পর স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। শিশুটি তার নিজের সন্তান নয় বলে মনে করতেন অভিযুক্ত। এনিয়ে প্রায়শই অশান্তি লেগে থাকত। কিছুদিন আগে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান মমতা। আবার স্বামীর ডাকে সাড়া দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ফিরেও আসে তিনি। কিন্তু সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে অজয়ের সন্দেহ কমেনি। মদ্যপ অবস্থায় বুধবার শিশুটিকে বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে বের হন।
[আরও পড়ুন: পার্থ ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের বাড়িতে CBI হানা]
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশে এসিপি (অণ্ডল) ওমর আলি মোল্লা জানান, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই শিশুটির মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। কী কারণে এই ঘটনা ঘটলো তা ধৃতকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে।”