সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা ও মৃত্যুর প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল বিদ্বজ্জনের একাংশ। এমনকী, গত ২০ জুলাই মুখ্যমন্ত্রীকে এর প্রতিবাদে খোলা চিঠিও দেওয়া হয়। সেই চিঠিতে সই করেছিলেন টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের। কিন্তু সেই অনির্বাণই ২৪ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের হাত থেকে মহানায়ক সম্মান পেলেন! সম্মান গ্রহণের সে ছবি প্রকাশ্য়ে আসতেই বিতর্ক। অনেকেই মনে করছেন, প্রতিবাদী চিঠিতে নাম সই করার পরেও কীভাবে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে রাজ্য সরকারের এই পুরস্কার নিলেন অনির্বাণ? নেটদুনিয়ার একাংশ আবার অভিনেতাকে ভণ্ড বলেও কটাক্ষ করেছে।
এই বিতর্ক কানে এসেছে অনির্বাণেরও। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি স্পষ্ট জানান, আমাকে যদি কেউ ভণ্ড বলে, তাহলে আমি তা নিয়ে কোনও তর্ক-বিতর্কে যেতে চাই না। বরং বলব, মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করাটা সব সময়ই গর্বের।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার প্রতিবাদে এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী-পরিচালক অপর্ণা সেন। যেভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাস হয়েছে তার তীব্র নিন্দা করলেন অপর্ণা। সম্প্রতি মহাবোধি সোসাইটি হলে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে স্পষ্ট অপর্ণা জানিয়েছিলেন, ‘এ রাজ্যে পরিবর্তন দরকার ছিল। কিন্তু তাঁর বদলে এমন ঘটবে তা চাওয়া হয়নি।’ শুধু তাই নয়, ভোট সন্ত্রাসের বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের কাছে খোলা চিঠি দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
চিঠিতে অপর্ণা সেন উল্লেখ করেছেন, ‘আপনি অবগত আছেন যে ৮ জুন থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত গত ৩৭ দিনে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৫২ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এবং বহু মানুষ নিখোঁজ। আপনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব অস্বীকার না করেও, এই কথা অবশ্যই বলা যায় যে এই পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রিক হত্যালীলা, এবং অরাজকতার দায়িত্ব মূলত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এবং আপনার।’
এদিন অপর্ণা , ”বাংলার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ‘জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ’ বলেও ব্যাখা করেছেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমার বলার মতো কিছুই নেই। সকলের মতো আমিও নিরুপায় হয়ে দেখছি। কিছু বলেও তো লাভ হচ্ছে না! সেই সময় পরিবর্তনের ডাক দেওয়া ভুল ছিল না, দরকার ছিল। তখন বামেরা যা করছিল, অত্যন্ত অন্যায় করছিল। হার্মাদ বাহিনী গ্রামে গ্রামে ভোট দিতে দিতে না। আমরা দেখেছি। সেগুলো ভুলিনি। কিন্তু এটা চাইনি।”