অর্ণব আইচ: শপিং মলে জঙ্গি হামলা হয়েছে! বুধবার সকালে এই বার্তায় হুলস্থূল পূর্ব কলকাতায়। শপিং মলটি ঘিরে ফেলল কলকাতা পুলিশের কমান্ডো বাহিনী। মলে উপস্থিত সবাইকে পুলিশ আশ্বস্ত করল। চলল ‘গুলির লড়াই’। ধরা পড়ল জঙ্গিরা। যদিও শেষ পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হল, পুরোটাই জঙ্গি হামলার ‘মক ড্রিল’।
২১ জুলাইয়ের আগের দিনই কোনও শপিং মলে জঙ্গি হামলা হলে কলকাতা পুলিশ কীভাবে মোকাবিলা করবে, তারই মহড়া হল এদিন। পুলিশ জানিয়েছে, ই এম বাইপাসের অদূরে মানিকতলা এলাকার কাঁকুড়গাছির ওই শপিং মলটি তখন সবে খুলেছে। হঠাৎই মুখোশ পরা কয়েকজন হাজির শপিং মলে। সবাইকে পণবন্দি করে তারা নিজেদের জঙ্গি বলে ঘোষণা করে। অল্প সময়ের মধ্যেই সেই বার্তা যায় লালবাজার ও থানায়। খবর পেয়ে ছুটে যায় পুলিশ।
[আরও পড়ুন: সহ উপাচার্যের রহস্যমৃত্যুতে শোকস্তব্ধ যাদবপুর, বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিন ছুটি ঘোষণা]
জঙ্গিরা দাবি করে, তারা যে বোমা রেখেছে, তা ফেটে যাবে। উড়িয়ে দেওয়া হবে শপিং মল। সেইমতো ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের কমান্ডো বাহিনী ও বিশেষ বাহিনী। শপিং মল ঘিরে ফেলে কমান্ডো। পুলিশের অন্য টিম গিয়ে দরাদরি শুরু করে জঙ্গিদের সঙ্গে। এর মধ্যে গুলিও চালায় জঙ্গিরা। জঙ্গি ধরার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডের দু’টি গার্ড ডগ ও দু’টি বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ কুকুর শপিং মলে পৌঁছয়। তারা প্রায় দেওয়ালের সঙ্গে মিশে ঢুকে যায় ভিতরে। একই সঙ্গে শপিং মলের ম্যাপ দেখে রাস্তা খুঁজে নিয়ে কমান্ডোরা ঢুকতে শুরু করেন ভিতরে। যাতে কেউ আতঙ্কিত হয়ে না পড়েন, সেই ব্যবস্থা নেয় বাহিনী।
জঙ্গিদের শরীরের গন্ধ শুঁকে তারা কোন আনাচে কানাচে লুকিয়ে আছে, তা খুঁজে বের করে দু’টি গার্ড ডগ। এর পর শুরু হয় গুলির লড়াই। ‘ভারচুয়াল গুলি’ চালাতে শুরু করে দু’পক্ষই। শেষ পর্যন্ত কমান্ডোদের কাছে হার মানে ‘জঙ্গি’রা। তারা কোথায় বিস্ফোরক রেখেছে, তা খুঁজে বের করে বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দুই পুলিশ সারমেয়। বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা সেই বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করেন। তিন ঘণ্টার উপর চলে এই অভিযান। এর পর শপিং মলকে কীভাবে আরও সুরক্ষিত রাখতে হবে, তাও নিরাপত্তারক্ষীদের বোঝান পুলিশ আধিকারিকরা। কলকাতাকে সুরক্ষিত রাখতে এই ধরনের মহড়া আরও চলবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।