সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পিএনবি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ভারতীয় ব্যবসায়ী মেহুল চোকসিকে (Mehul Choksi) অ্যান্টিগা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। এবং এর সঙ্গে ভারতীয় পুলিশ জড়িত রয়েছে বলে বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছিলেন অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর আইনজীবী। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ ডোমিনিকায় মেহুলের গ্রেপ্তারির পর তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, মেহুলের শরীরের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: বিমান ‘হাইজ্যাক’ কাণ্ডে একঘরে বেলারুশ, পুতিনের কাছে দরবার লুকাশেঙ্কোর]
শুক্রবার চোকসির আইনজীবীর এই অভিযোগ ওড়াল অ্যান্টিগা পুলিশ। রয়্যাল পুলিশের কমিশনার অ্যাটলি রোনডি বলেন, “অভিযুক্ত ভারতীয় ব্যবসায়ী মেহুল চোকসিকে জোর করে অ্যান্টিগা থেকে ডোমিনিকায় অপহরণ করে আনা হয়েছে বলে আমাদের কাছে কোনও খবর নেই। এমনকী, ডোমিনিকা পুলিশও এই ব্যাপারে কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে জানায়নি। আমরা এইটুকু বলতে পারি, মেহুল চোকসি অ্যান্টিগা থেকে পালিয়ে কিউবা যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।”
ডোমিনিকায় ভারতীয় ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার হওয়ার পর, তাঁকে ফেরত নিতে ইতিমধ্যেই আপত্তি জানিয়েছে অ্যান্টিগা সরকার। ডোমিনিকা থেকেই মেহুলকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। যদিও অ্যান্টিগার এই অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়েছে ডোমিনিকা পুলিশ। কূটনীতি মেনে, মেহুলকে অ্যান্টিগাতেই ফেরানো হবে বলে তারা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ডোমিনিকার আদালতে মেহুলকে পেশ করা হলে তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, কোনওভাবেই যাতে মেহুলকে দিল্লির হাতে তুলে না দেওয়া হয়। কারণ, মেহুল এখন আর ভারতীয় নাগরিক নন। তিনি অ্যান্টিগার বাসিন্দা।
বলে রাখা ভাল, ডোমিনিকায় চোকসির হয়ে মামলা লড়ছেন ওয়েন মার্শ। এক সাক্ষাত্কারে মার্শ জানান, মক্কেলের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেতে তাঁকে অনেক কসরত করতে হয়েছে। মেহুলের চোখের তলা ফুলে গিয়েছে। এছাড়া, শরীরেও বেশ কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। খুন করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মেহুল। ওই আইনজীবীর বয়ান অনুযায়ী, তাঁর কাছে অপহরণের কথা উল্লেখ করেছেন চোকসি। ‘পলাতক ব্যবসায়ী’ জানিয়েছেন, অ্যান্টিগা এবং বারবুডার জলি হারবার থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীদের দেখে তাঁর অ্যান্টিগা ও ভারতীয় পুলিস বলেই মনে হয়েছে। সেখান থেকে একটি ভেসেলে করে তাকে ডোমিনিকা নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, অভিযুক্ত ভারতীয় ব্যবসায়ীর নাগরিকত্ব নিয়ে বরাবর আপত্তি জানিয়েছে অ্যান্টিগা সরকার। পিএনবি কেলেঙ্কারির পর ২০১৮ সাল থেকে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে বসবাস করছেন মেহুল চোকসি। তাঁকে কোনও নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি বলে এদিনও দাবি করেছে অ্যান্টিগার রয়্যাল পুলিশ। ভারত মেহুলের প্রত্যপর্ণের জন্য বহুবার অ্যান্টিগার কাছে আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু অ্যান্টিগার সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। ফলে গোটা প্রক্রিয়া ঘিরে বেশ কিছু আইনি জটিলতা দেখা দিয়েছে।