সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমেরিকা সফরের আগেই চিনের পথে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। আগামী কাল শনিবারই রওনা দেবেন তিনি বলে খবর। বেজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলা ঠান্ডা লড়াইয়ের আবহে ব্লিঙ্কেনের এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আগামী ২২ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Modi) নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন। সেখানে নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানাতে ২১ বার গান স্যালুট দেওয়া হবে। জুনের ২১ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত এই সফরে দ্বিতীয়বারের জন্য মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সফরের আগেই ভারত ও মোদি স্তুতি শোনা যাচ্ছে শীর্ষ মার্কিন কর্তাদের মুখে। যার মধ্যে অন্যতম হোয়াইট হাউসের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক সমন্বয়কারী পদে থাকা কার্ট ক্যাম্পবেল। মোদি প্রশস্তি শোনা গেল মার্কিন নিরাপত্তা পরিষদের সমন্বয়কারী জন কারবি ও মার্কিন বিদশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের মুখেও।
এই সফরেই একাধিক সামরিক চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুই দেশের মধ্যে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হামলাকারী ড্রোন। সদ্য আমেরিকায় তৈরি অত্যাধুনিক এমকিউ ৯ রিপার ড্রোন কেনায় সবুজ সংকেত দিয়েছে নয়াদিল্লি। প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে আসবে কমপক্ষে ৩০টি এমকিউ ৯ রিপার বা প্রিডেটর ড্রোন।
[আরও পড়ুন: প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত রেললাইন বানাব! বাইডেনের মন্তব্যে হাসির রোল]
এই প্রেক্ষাপটে ব্লিঙ্কেনের চিন সফরকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, আগামী কাল ‘দ্য ফরবিডেন সিটি’ বেজিংয়ের উদ্দেশে পাড়ি দেবেন ব্লিঙ্কেন। ১৮ ও ১৯ জুন কমিউনিস্ট দেশটির শীর্ষনেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে বসবেন তিনি। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গেও রুদ্ধদ্বার আলোচনা হবে তাঁর বলে খবর। বিশ্লেষকদের মতে, চলতি বছরের শেষের দিকেই চিন যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার আগে জমি তৈরি করতেই এই যাত্রা ব্লিঙ্কেনের।
কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, মোদির আমেরিকা সফর নিয়ে উদ্বিগ্ন চিন। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও দক্ষিণ চিন সাগরে ওয়াশিংটন বনাম বেজিং লড়াইয়ে বাইডেন প্রশাসনের তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন মোদি। বিশেষ করে কোয়াড গোষ্ঠী যে চিনকেন্ত্রিক তা সবার জানা। তাই ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে নমোর সফর নিয়ে জিনপিংকে খানিকটা আশ্বস্ত করাও ব্লিঙ্কেনের উদ্দেশ্য। তবে মোদি সফরে এই ঘটনার কতটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা এখনই বলা কঠিন। কারণ, গালওয়ান পরবর্তী পরিস্থিতিতে মার্কিন ড্রোন ও অন্যান্য মার্কিন অস্ত্রে আগ্রহ বেড়েছে ভারতের। হাতে আসলে সেগুলি যে চিন সীমান্তে মোতায়েন হবে তা বলাই বাহুল্য। আবার, সাগরে ড্রাগনকে রুখতে দিল্লিকে পাশে চাই ওয়াশিংটনের। ফলে, একে অপরের পরিপূরক দুই দেশ।