শেখর চন্দ্র, আসানসোল: সেনাপতির নির্দেশেই কাজ, সে তিনি ময়দানে থাকুন বা না থাকুন। যে কোনও লড়াইয়ের আগে এই মূল মন্ত্র মনে করেই যেন এগোচ্ছেন বীরভূমের জেলবন্দি তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। তাই বন্দিদশাতেও পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayet Election) ব্লু প্রিন্ট তৈরি করছেন তিনি। শনিবার ফের আদালতে তাঁকে পেশ করা হয়েছিল। ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এদিন এজলাসে শুনানির মাঝেই আদালতে উপস্থিত অনুগামীদের পঞ্চায়েত ভোটের পাঠ দিলেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। স্পষ্ট বললেন, সামনে পঞ্চায়েত। নিজ নিজ এলাকায় ভালভাবে কাজ করতে হবে।
গরু পাচার মামলায় শনিবার আসানসোল সিবিআই (CBI) বিশেষ আদালতে তোলা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। এদিন হাজিরা দেন আদালতে। সিবিআইয়ের আইনজীবী ও অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) আইনজীবীর সওয়াল জবাব পর্ব শেষে এজলাসে বিরতি হয়। বিচারকও নিজের চেম্বারে যান। আদালত সূত্রে খবর, সেই সময়ই অনুব্রত মণ্ডলের বেশ কয়েকজন অনুগামী আসেন আদালত চত্বরে।
[আরও পড়ুন: বিশেষ কারণে নবান্নে আসছেন না অমিত শাহ, স্থগিত পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক]
সূত্রের দাবি, তাঁরা ব্যক্তিগত কথাবার্তা বলেন ‘দাদা’র সঙ্গে। একজন তারাপীঠের পুজো করা ফুল মাথায়ও ঠেকিয়ে দেন অনুব্রতর। অনুব্রতও পাল্টা তাঁদের কাছে খুঁটিনাটি নানা খবর নেন। বিজয়া সম্মিলনী ঠিকমতো হচ্ছে কি না। এরপরই দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন, সকলে যেন নিজ নিজ বিধানসভা এলাকায় ভালভাবে নজর রাখেন। দলের কাজকর্ম দেখেন। কারও বাইরে যাওয়ার দরকার নেই বলেও নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটে সবাইকে উঠে পড়ে কাজে নেমে পড়ারও কথা বলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: মুসলিম সেজে কবরস্থান তৈরির নামে জমি হাতানোর অভিযোগ, মধ্যপ্রদেশে কাঠগড়ায় BJP]
অনুব্রত মণ্ডল বীরভূম (Birbhum) জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের অভিভাবক। তাঁর হাতের মুঠোয় জেলার দলীয় সংগঠন। দক্ষ সংগঠক হিসাবে তাঁর দক্ষতা ইতিমধ্যেই প্রশংসিত দলের সর্বস্তরে। সেই অনুব্রত এখন জেলে। এদিকে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটের দামামা কার্যত বেজেই গিয়েছে। জেলায় জেলায় প্রস্তুতি শুরু। এই অবস্থায় অনুব্রতর অনুপস্থিতি একটা প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, জেলার বিভিন্ন জায়গায় যেমন দুবরাজপুর, নানুরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ থাকলেও অনুব্রত মণ্ডল তা সামলে দিতেন কোনও এক ম্যাজিকে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দলের মুখ তিনি বলেই মত রাজনীতির কারবারিদের। এদিন অনুগামী, কর্মীদের তাই হয়ত কিছুটা ভরসা জোগাতে দেখা গেল আদালত থেকেই। বোঝালেন, মেঘনাদের মতো আড়াল থেকে বীরভূমে জেলায় তিনিই পঞ্চায়েত ভোটের সেনাপতি।