সুপর্ণা মজুমদার: চলমান সময়। আর তার স্রোতে বহমান জীবন। জীবনের পরিসরে এমন কিছু ঘটনা থাকে যাকে যুক্তির জোর দিয়ে ব্যাখ্যা করা মুশকিল। অপরাজিতা আঢ্যর ক্ষেত্রেও একথা খাটে। অভিনেত্রী যেমন ঈশ্বরবিশ্বাসী, তেমনই ভূত বা অলৌকিকতাতেও তাঁর বিশ্বাস রয়েছে। সেই সমস্ত কথাই বললেন ভূত চতুদর্শীর আগে। জানালেন নিজের জীবনের ভূত-কথা।
ছবি: ফেসবুক
বিশ্বাস আছে...
ভগবানে যখন বিশ্বাস করি তখন ভূতে অবশ্যই বিশ্বাস আছে এবং বিশ্বাস করি বলেই জানি যে ভূত আছে। যেমন মনুষ্য অস্তিত্বে বিশ্বাস করি, ঈশ্বর আছেন এবং তিনি সর্বেসর্বা হয়ে সমস্ত কিছু চালান বলে মানি, তেমনই ভূতেও বিশ্বাস করি। আত্মার যে অস্তিত্ব রয়েছে সেটা আমি বিশ্বাস করি।
জীবনের ভূত ...
আমার জীবনে ভূত কে সেটা যদি বলতে হয় তাহলে বলব সেটা আমার ভিতরে থাকা ভয়। কিছু সময় আমিও ঘাবড়ে যাই, ভয় পাই। আমার ইচ্ছাশক্তিই আমার ভগবান। এই ইচ্ছাশক্তির জোরেই আমি নিজেকে দাঁড় করিয়েছি। এখনও তা আধার করেই চলি। সুতরাং আমার ইচ্ছাশক্তিই আমার ঈশ্বর। আর আমার জীবনের ভূত যদি কেউ হয় সেটা আমার ভয়।
ভূতের অস্তিত্বর প্রমাণ...
হ্যাঁ, অনেক কিছুতেই প্রমাণ পেয়েছি। আমাদের বাপের বাড়িতে, মানে হাওড়ার বাড়িতে কেউ যখন মারা যায় তার আগে অনেক ধরনের অলৌকিক ঘটনা ঘটে সেগুলো ভারি অদ্ভূত। আমার বাবা যখন মারা যায় তখন আমি অনুভব করেছি। মা মারা যাওয়ার আগে যেহেতু ওই বাড়িতে আমি ছিলাম না সেই কারণে কিছু ফিল করিনি। কিন্তু, অনেকরকম ঘটনা ঘটেছে যার জন্য আমি বাড়িতে বলেই দিয়েছিলাম যে এটাই আমার মায়ের সঙ্গে শেষ জন্মদিন। তখন সবাই বিশ্বাস করতে চায়নি। কিন্তু আমি বলেছিলাম, আমার জন্মদিনের জন্যই মা বেঁচে আছেন এবং আমার জন্মদিন শেষ হলেও মা আর থাকবেন না দেখে নিও। ঠিক আমার জন্মদিনের পাঁচ দিনের মাথায় আমার মা মারা যান।
ফাইল চিত্র
সারান্ডা-কথা
একটা অদ্ভূত ঘটনা আছে। শুটিং করতেই সারান্ডায় গিয়েছিলাম। আমাদের রাতের বেলায় গেস্ট হাউস থেকে বেরোতে বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আমি ও আমার এক বান্ধবী কি সেকথা শোনার পাত্রী। পূর্ণিমার রাতে জঙ্গলের রাস্তায় বেরিয়ে পড়লাম। সমস্ত কিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু কিছুদূর হাঁটার পর পা যেন থমকে গেল। আর এগোবার শক্তি নেই। সোজা তাকাতেও পারছি না। আমি আর আমার বান্ধবী একে অন্যের দিকে শুধু তাকাতে পরছিলাম। আর মনে হচ্ছিল যেন দূরে কোনও একজন মহিলা সাদা শাড়ি পরে একটা ঝুরিওয়ালা বটগাছের তলায় দাঁড়িয়ে আছে। বেশ কিছুক্ষণ ওই অবস্থায় থাকার পরে আমরা কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কথা বলার শক্তি হারিয়েছিলাম। ভিতরে কেমন একটা অসম্ভব কিছু ফিল হচ্ছিল। কোনও মতে দৌড়ে গেস্ট হাউসে ফিরে আসি। পরে ওই পথ দিয়েই যখন শুটিংয়ে যাই তখন দেখি যে বটগাছটা পর্যন্ত আমরা এগোতে পারিনি তার ঠিক পরেই বিশাল খাদ রয়েছে। তার পাশে ঝরনা। মানে রাতে আর একটু এগোলেই চূড়ান্ত বিপদ হোতো। সুতরাং সেদিন ভগবান বল বা ভূত, যাই বল না কেন আমাদের রক্ষা করেছিল।
ছবি: ফেসবুক