সুব্রত যশ, আরামবাগ: ছোট থেকেই ছিল পড়াশোনায় ভাল। ছোট্ট একটি গ্রামে তিন ভাই এবং বাবা-মায়ের সঙ্গে বাস। এলাকার শান্ত ছেলে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, তা শুনে তাজ্জব গ্রামবাসীরা। কাজি আহসান উল্লাহকে গ্রেপ্তারের পরেই আরামবাগজুড়ে জোর শোরগোল।
উত্তর ২৪ পরগনার খড়িবাড়ি থেকে বুধবার রাতে জঙ্গি সন্দেহে দু’জনকে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে একজন কাজি আহসান উল্লাহ। সে হুগলির আরামবাগের সামতা গ্রামের কাজিপাড়ার বাসিন্দা। ঝোপঝাড়ে ঘেরা ছোট্ট একটা পাকা বাড়ির বাসিন্দা সে। বাবা কাজি শফি উল্লাহ বর্তমানে বর্ধমানে কর্মরত। সামতা হাইমাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে সে। তারপর কর্মসংস্থানের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ে। কখনও হাওড়া, আবার কখনও উত্তর ২৪ পরগনায় দিন কেটেছে তার। বাড়ির প্রত্যেকেই জানতেন কাজি আহসান উল্লাহ পুরনো মোটরবাইক কেনাবেচার ব্যবসা করে। কিন্তু বুধবারের গ্রেপ্তারির পর দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে অজানা বাস্তব।
[আরও পড়ুন: নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর, তৃণমূলে যোগদান নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা]
কাজি আহসান উল্লাহর কাকা কাজি ফয়জুল ইসলাম বলেন, “পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছিল সে। মাঝেমধ্যে গ্রামে আসত। কোনও পারিবারিক অনুষ্ঠান থাকলে বাড়িতে আসত সে। কি করত তা কেউই জানেন না।” প্রতিবেশীরা জানান, মাঝেমধ্যে গ্রামে আসত কাজি আহসান উল্লাহ। কিন্তু সেভাবে মেলামেশা কারও সঙ্গে করত না। কথাও বলত না। বাজারে অল্প ঘোরাঘুরি করে ফের বাড়ি চলে যেত। তবে আহসান উল্লাহর সঙ্গে তার বাড়িতে কখনও কাউকে আসতে দেখেনি।
ছেলে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তা মানতে নারাজ আহসান উল্লাহর মা ফরিদা বিবি। কীভাবে এমন হল তা বুঝতে পারছেন না তিনি। বলেন, “নিজের মতো করে পছন্দ করে বিয়ে করেছিল ছেলে। পরিবারের কারও সঙ্গে ওর সেভাবে যোগাযোগ ছিল না। মাঝেমধ্যে গ্রামে আসত। এবার মহরমের সময় বাড়ি এসেছিল। তারপর থেকে আর আসেনি। আগে দর্জির কাজ করত। কাজি বর্তমানে পুরাতন গাড়ির ব্যবসা করত বলে শুনেছি। ছেলে কীভাবে জঙ্গি হয়ে উঠল তা জানিনা।” উপযুক্ত তদন্তের পর দোষ প্রমাণিত হলে ছেলের শাস্তি হোক, দাবি জঙ্গি সন্দেহে ধৃতের মায়ের।