বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, নদিয়া: মেসির (Leonel Messi) অন্ধ ভক্ত। প্রিয় দল আর্জেন্টিনা (Argentina)। প্রিয় দল আর তারকার খেলা দেখতে গিয়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন চাকদহের এক যুবক। টানা তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়লেন তিনি। ৯০ মিনিটের খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে মেসির দল আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছে গেলেও পরিবারের কাছে ফিরলেন না চাকদহের সুমন দাস। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ২৬ বছরের যুবকের।
গত শুক্রবার গভীর রাতে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল আর্জেন্টিনা। আগের ম্যাচেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল ব্রাজিল। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কে ভুগছিলেন সুমনের মতো আর্জেন্টিনীয় সমর্থকরা। এদিকে ম্যাচ শেষ পর্যন্ত গড়ায় টাইব্রেকারে। এই উত্তেজনা আর সহ্য করতে পারেননি সুমন। মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে তাঁর অচেতন দেহ।
[আরও পড়ুন: ‘এ পৃথিবী একবারই পায় তারে…’, মারাদোনা নন, নতুন পৃথিবীর ধ্রুবতারা মেসিই]
সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির লোক তাঁকে নিয়ে যান চাকদহ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখান থেকে সুমনকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার এক হাসপাতালে। সেই বেসরকারি হাসপাতালে তিন দিন ধরে লড়াই করার পরে অবশেষে হার মানেন ওই যুবক। শেষ পর্যন্ত ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয় সুমনের। স্বাভাবিক ভাবেই এমন ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বুধবার দুপুরে চাকদহ শহরের বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ হয় তাঁর দেহ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পরিবার,প্রতিবেশী ও বন্ধুরা। কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না কী ঘটে গিয়েছে!
সুমনের বন্ধুরা জানাচ্ছেন, একেবারে শেষ মুহূর্তে খেলায় সমতা ফিরিয়েছিল নেদারল্যান্ড। অতিরিক্ত সময়ও ফলাফল একই থাকে। পেনাল্টি শুট আউটের আগে উত্তেজনা চরমে ওঠে। আর এই উত্তেজনাতেই মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় তাঁর। ফলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েন। এভাবে একটি ম্যাচের উত্তেজনায় এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যাবে এটা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না সুমনের পরিজনদের। আর্জেন্টিনা ফাইনাল পৌঁছে গিয়েছে। সেমিফাইনালে অসামান্য ফুটবল খেলেছেন মেসিরা। কিন্তু সুমনের আর সেসব জানা হল না। তিনি পাড়ি দিয়েছেন সেই দেশে, যেখান থেকে ফিরতে পারেন না কেউই।