সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের থেকে পাননি টিকিট। তা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। বিজেপিতে যে ফিরছেন, সেই জল্পনায় সিলমোহর দিয়েছিলেন নিজেই। শুক্রবার ফের বিজেপিতে 'ঘর ওয়াপসি' অর্জুন সিংয়ের। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন দিব্যেন্দু অধিকারীও। তিনি তমলুকের তৃণমূল সাংসদ ছিলেন। এবং সম্পর্কে শুভেন্দু অধিকারীর ভাই। দিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে অমিত মালব্যর হাত থেকে বিজেপির দলীয় পতাকা হাতে তুলে নেন তাঁরা।
উনিশের লোকসভা ভোটের আগের চিত্রনাট্যের পুনরাবৃত্তি ঘটল চব্বিশের ভোটের আগে। উনিশের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে শিবির বদল করেছিলেন ভাটপাড়ার ‘বাহুবলী’ অর্জুন। বিজেপির টিকিটে জিতেও আসেন। কিন্তু একুশের ভোটে তাঁর খাসতালুক নৈহাটি, বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে কোনও ম্যাজিক দেখাতে পারেননি। উলটে বোমাবাজি, তোলাবাজি, গুন্ডামির মতো অভিযোগ আসছিল অর্জুনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে ফেরেন অর্জুন সিং। কিন্তু শাসক দলের সঙ্গে তাঁর সুর মিলছিল না। বার বার তাল কাটছিল। এর মধ্যে লোকসভা ভোটের আগে শাসকদলের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম ও অর্জুন সিংয়ের দ্বন্দ্ব। সূত্রের খবর, দ্বন্দ্বের জেরেই লোকসভার টিকিট কাটা যায় অর্জুনের। তার পর থেকেই ফের পদ্মে আশ্রয় খুঁজছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: হাওড়া ব্রিজে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পিলারে ধাক্কা বাসের]
আর হলও তাই। বছর দুয়েকের মধ্যে ফের বিজেপিতে অর্জুনের 'প্রত্যাবর্তন'। সূত্রের খবর, বারাকপুর থেকে বিজেপির প্রার্থী হতে পারেন তিনি। শুক্রবার বিজেপিতে ফেরার পরই রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, "মোদির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ফের বিজেপিতে ফেরা। ২০২১ সালে ভোটের পর থেকে বাংলায় হিংসা, অত্যাচার বেড়েছে। দলীয় কর্মীদের অত্যাচার থেকে বাঁচাতে তৃণমূলে ফেরার সিদ্ধান্ত। বাংলার সব বিধানসভা কেন্দ্রই এক একটা সন্দেশখালি। সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর অত্যাচার নিন্দাজনক। বাংলার দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যুক্ত প্রশাসন।"
বিজেপিতে যোগ দিলেন তমলুকের তৃণমূলের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও। ফুলবদলের পরই তিনি সন্দেশখালি কাণ্ডে মুখ খোলেন। বলেন, "আজ আমার জন্য একটা শুভদিন। আমরা মা দুর্গা, মা কালীর পুজো করি। সন্দেশখালিতে বিজেপি সকলের আগে গিয়েছে। বিজেপি ওখানকার নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপির হয়ে কাজ করে চলেছেন। সন্দেশখালিতে যা হয়েছে, তার নিন্দার ভাষা নেই। সন্দেশখালি এখন সারা দেশের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৫০০-১০০০ টাকা দিয়ে মহিলাদের সম্মান করা যায় না। মমতার দল বাংলার মহিলাদের সম্মান করতে ব্যর্থ হয়েছে। মোদিজিকে ৪০০ পার করানোর লক্ষ্যে আমি কাজ করব।"
অর্জুন সিং এবং দিব্যেন্দু অধিকারীর ফুলবদল নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। X হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, "বিজেপি নেতারাই যোগ দিলেন বিজেপিতে, এটা আর নতুন কী? দিব্যেন্দুও যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। পরিবারতন্ত্র নিয়ে এবার কী বলবেন মোদি? মোদি গ্যারান্টি জিরো ওয়ারেন্টি।" বলে রাখা ভালো, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা উল্লেখ করে বার বারই মমতাকে পরিবারতন্ত্রের খোঁচা দেয় বিরোধী বিজেপি। যদিও বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে 'সম্পর্ক শেষ' করেই পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ নস্যাৎ করেছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।