সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গতকালই ‘অগ্নিপথ’ (Agnipath) প্রকল্পের আওতায় ভারতীয় স্থল সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বায়ুসেনা বাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ভাষায়, “ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত”। যদিও ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। গতকাল ঘোষণার পর নতুন করে তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সেনায় চাকরিপ্রার্থীদের প্রশ্ন, চার বছরের চুক্তি শেষে কী করব? অনেকেই মনে করছেন, এর চেয়ে অন্য ক্ষেত্রে চাকরি খোঁজা বুদ্ধিমানের কাজ।
উল্লেখ্য, এই প্রক্রিয়ায় প্রতিরক্ষা বাহিনীর (Indian Army) তিন বিভাগে চার বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হবে। নিয়োগ করা হবে ৪৫ হাজার তরুণকে, যাদের বয়স ১৭ বছর ৫ মাস থেকে ২১ বছরের মধ্যে। চার বছর হওয়ার পর সব বিভাগের ১০০ শতাংশ সেনার চাকরি চলে যাবে। তারপর তাদের মধ্য থেকে পূর্ণাঙ্গ সময়ের জন্য ২৫ শতাংশ সেনাকে পুনরায় নিযুক্ত করবে সরকার। যাঁদের চাকরি থাকবে না, তাঁদের এককালীন ১১ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকার প্যাকেজ দেওয়া হবে, জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। স্বল্প মেয়াদি নিয়োগের ফলে সরকারের ৫.২ কোটি টাকা বাঁচবে।
[আরও পড়ুন: সর্বসম্মতিক্রমেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন চায় BJP! কংগ্রেসকে ফোন রাজনাথের, কথা হতে পারে মমতার সঙ্গেও]
সেনায় চাকরিপ্রার্থী তরুণরা এই বিষয়েই একাধিক প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের বক্তব্য, আমাদের বোকা বানানো হচ্ছে। বিহারের বাসিন্দা গুলশন কুমার গত কয়েক বছর ধরে সেনায় চাকরির জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। অগ্নিপথ প্রকল্পের বিষয়ে জেনে হতাশ তিনি। তাঁর কথায়, এর মানে সেনার চার বছরের চাকরির পর ফের পড়াশুনো করতে হবে, অন্য চাকরির জন্যে। এদিকে ওই চার বছর নষ্টও হবে। তিনি বলেন, আমি এখন অন্য চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ভাবছি। আরেক চাকরিপ্রার্থী শিবম কুমার বলেন, যদি চার বছর পর আমাকে বাহিনীতে ফেরানো না হয় তবে বিপদে পড়ব। এর চেয়ে ভাল অন্য চাকরির চেষ্টা করা। তিনি আক্ষেপ করেন, গত দুই বছর সেনার চাকরির জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। এখন শুনছি চার বছরের কাজ!
[আরও পড়ুন: মমতার ডাকা বৈঠকে আসছে কংগ্রেস, থাকবে না আপ-টিআরএস-অকালি দল!]
গুলশন কুমার, শিবম কুমার যা বলছেন, তা দেশের বহু চাকরিপ্রার্থীর বক্তব্য। সকলেই স্বপ্ন দেখছিলেন, সেনায় চাকরি করবেন। কিন্তু চার বছরের চুক্তিভিত্তিক চাকরির কথা জেনে এখন পিছিয়ে আসতে শুরু করেছেন। অনেকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন। অন্য ক্ষেত্রে চাকরি করার কথা ভাবছেন। যদিও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, চার বছর পর বসিয়ে দেওয়া ৭৫ শতাংশ সেনার সরকারের অন্যান্য কাজে বা বেসরকারি অফিসে চাকরি পেতে অসুবিধা হবে না। কারণ, সেনায় কাজ করার সুবাদে তাঁরা কর্মক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।