সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে বাতিল ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর চাকরি। একে তো এক কলমের আঁচড়ে চাকরি চলে গিয়েছে। তার উপর আবার বেতন ফেরতেরও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু কাদের ফেরাতে হবে বেতন, কারা ছাড় পাচ্ছেন - তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছে, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাঁরা নিযুক্ত তাঁদের মধ্যে 'অযোগ্য' প্রায় সাত হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীকে বেতন ফেরত দিতে হবে। তবে 'অযোগ্য' হিসাবে যাঁরা চিহ্নিত নন তাঁদের চাকরি চলে গেল ঠিকই। তবে তাঁদের বেতন ফেরৎ দিতে হবে না। বিশেষভাবে সক্ষমদেরও বেতন ফেরৎ দিতে হবে না। আগামী তিন মাস নতুন করে নিয়োগ না পাওয়া পর্যন্ত চাকরি করতে পারবেন বিশেষভাবে সক্ষমরা। তাঁরা বেতনও পাবেন।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির অভিযোগে ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল, কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বাতিল হয়েছিল ২০১৬-র এসএসসি প্যানেল। মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কোর্টের কলমের খোঁচায় চাকরি হারিয়েছিলেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষককর্মী। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। শীর্ষ আদালতে দফায় দফায় সেই মামলার শুনানি হয়। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাই কোর্টের চাকরি বাতিল এবং বেতন ফেরতের রায়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। তারপর থেকে দফায় দফায় শুনানি চলছিল।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ছিল শেষ শুনানি। তখন সিবিআই জানিয়েছে, তারা চাইছে, কলকাতা হাই কোর্টের ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের রায় বহাল থাকুক। স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, র্যাংক জাম্প বা প্যানেল বহির্ভূত নিয়োগের তথ্য থাকলেও ওএমআর শিট কারচুপির তথ্য তাদের কাছে নেই। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, একসঙ্গে এতজন শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা হলে বাংলার শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। সবপক্ষের সওয়াল শোনার পর রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত রায় শোনালেন তিনি।