ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: আরও বেশি ডাক্তার চাই। বলা ভাল, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চাই। আর ডাক্তার তৈরির ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজেরও বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা। কিন্তু এই পথে সবচেয়ে বড় অন্তরায় বেসরকারি কলেজের বিপুল খরচ। সেই কাঠামোয় বদল এনে, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার ফি-কে মধ্যবিত্তের আওতায় আনার সুপারিশ করল স্বাস্থ্য বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তাঁদের আশা, এতে শুধু ধনী নয়, মধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবী পড়ুয়ারাও ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাবেন। সবমিলিয়ে বেসরকারি ক্ষেত্রে মেডিক্যাল পড়ার খরচকে মধ্যবিত্তের নাগালে আনার প্রস্তাব দিল কমিটি।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যমন্ত্রককে দেওয়া (১৬৩তম) রিপোর্টে স্থায়ী কমিটি সুপারিশ খুব স্পষ্ট । বলা হয়েছে ‘বেসরকারি মেডিক্যাল শিক্ষাকে আরও সস্তা করা প্রয়োজন। এর জন্য ক্যাপিটেশন ফি আরও কড়াভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। একমাত্র তবেই, মধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের কাছেও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে পারে।’ কমিটির প্রশ্ন, কেন এখনও ৩০–৪০ লক্ষ থেকে ১ কোটি বা তারও বেশি খরচ পড়ে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়তে হবে? যেখানে দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া বিধি রয়েছে ক্যাপিটেশন ফি–সহ বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি ও পড়াশোনার ফি নিয়ে। কিন্তু ঘটনা হল, নজরদারির ফাঁক গলেই বহু মেডিক্যাল কলেজ ঢের বেশি ফি নেয় বলে অভিযোগ অনেক দিনের।
স্থায়ী কমিটির সদস্যদের একটা বড় অংশ মনে করেন, ভারতে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ার পাহাড়–প্রমাণ অর্থ খরচের ভয়ে নিটের মেধাতালিকায় নাম থাকা বহু ছাত্রছাত্রীই স্নাতকস্তরের ডাক্তারি পড়তে বিদেশে পাড়ি দেয়। কারণ, চিন, বাংলাদেশ, নেপাল, ইউক্রেন, রাশিয়া, ফিলিপিন্স, ভিয়েতনামের মতো দেশে ডাক্তারি পড়ার খরচ অত্যন্ত কম। তাই ডাক্তারের সংখ্যা গড়ে অনেক বেশি।ন৩০–৪০ লক্ষ টাকাতেই পুরো এমবিবিএস কোর্স পড়া হয়ে যায় ওই সব দেশে। কিন্তু বিপরীত চিত্র এদেশে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ার খরচ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনেকটা বেশি। তাই সরকারের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে বেসরকারি কলেজ চালুর সুপারিশও করেছে কমিটির একাধিক সদস্য। তাঁদের প্রস্তাব, জেলাস্তরের হাসপাতালগুলিকে পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য বেসরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া যেতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে। তাতে ওই কলেজের ফি স্ট্রাকচার অনেক সস্তা করা সম্ভব কর্তৃপক্ষের পক্ষে। স্কলারশিপ চালুর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে স্থায়ী কমিটির তরফে।