সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এতদিনের খলনায়ক হঠাৎই এখন নায়ক হয়ে উঠছে আমেরিকার (America) কাছে! প্রয়োজনে সেই ‘নায়কের’ হাত ধরে লড়াই করতেও তাঁদের এখন আপত্তি নেই। আইসিস (ISIS) দমনে তালিবানের হাত ধরতেও দ্বিধা নেই মার্কিনবাহিনী। অর্থাৎ জেহাদি গোষ্ঠী তালিবানই নাকি সন্ত্রাসদমনে সাহায্য করতে পারে। এমন কথা শোনালেন আমেরিকার শীর্ষ সেনাকর্তা জেনারেল মাইক মিলে (Army Gen.Mark Milley)।
হঠাৎ কেন এমন প্রসঙ্গে অবতারনা করলেন মার্কিন সেনাকর্তা? আফগানিস্তানের (Afghanistan) বর্তমান পরিস্থিতি ও সেনা প্রত্যাহারের কথা বলতে দিয়ে মাইক মিলে বলেন, “যুদ্ধক্ষেত্রে আমরা কী করতে চাই সেটা বড় কথা নয়। সবসময় সেই ইচ্ছাকে গুরুত্বও দেওয়া যায় না। বরং বাহিনী ও অভিযানের ঝুঁকি কমাতে পারে এমন পদক্ষেপ করতে হয়।” এর পরই তিনি বলেন, হয়তো ভবিষ্যতে এমন একটা সময় আসবে যখন আমেরিকাকে তালিবানের হাত ধরে আইসিস দমন করতে হবে। মার্কিন সেনাকর্তার এহেন মন্তব্যের পরই বেড়েছে বিতর্ক। নতুন করে তালিবান-আমেরিকার সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: Taliban Terror: ‘কথা নয়, যুদ্ধ হবে’, তালিবানকে স্পষ্ট বার্তা পঞ্জশিরের যোদ্ধাদের]
তবে বলে রাখা ভাল আমেরিকার এহেন ভোলবদল কিন্তু নতুন কিছু নয়। আমেরিকার এরকম ‘দ্বিচারিতা’ আগেও দেখেছে আফগানভূম। সেনাকর্তার এহেন মন্তব্যের পরই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা ইতিহাসের কবর খুঁড়ে সেই ইতিহাস বের করে আনছেন। ঠিক কী ঘটেছিল? ওয়াকিবহাল মহল জানাচ্ছে, আফগানিস্তানের মাটিতে রাশিয়ার (Russia) মোকাবিলা করতে আমেরিকার মদতেই তৈরি হয়েছিল মুজাহিদিন। সবই ঠিক চলছিল, হঠাৎই গ্লোবাল জেহাদে মদত দিতে শুরু করে মুজাহিদিন। রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায় তাদের। সেই সময় পালটা আফগান ছাত্রদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ‘গুড মুজাহিদিন’ ওরফে তালিবান (Taliban Terror) গড়ে তোলে আমেরিকা। কিন্ত ফের সমস্যা বাঁধে ২০০২-এর পর। ওসামা-বিন-লাদেনের উত্থানের পর ছবিটা বদলে যায়। বাকি ইতিহাসটা এখন প্রায় সকলেরই জানা।
তাই বলাই যায়, আমেরিকার কাছে কিছুই অসম্ভব না। যে তালিবানের বিরুদ্ধে দু’দশক ধরে রক্তক্ষয়ী লড়াই চালিয়েছে মার্কিন সেনা, কিছুদিন পর যদি তাঁদেরই তালিবানের সঙ্গে গা ঘেষাঘেষি করে লড়াই করতে দেখা যায়, তাহলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ, আমেরিকার নিজের পিঠ বাঁচাতে মন্ত্র এখন একটাই, ‘শক্রর শক্র আমার বন্ধু।’