নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান: সংশোধনাগার থেকে অনলাইনে ক্লাস করলেন অর্ণব দাম। শুক্রবার অনলাইনে ক্লাস করেন একদা মাওবাদী নেতা অর্ণব। এদিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে পিএইচডির দ্বিতীয় দিনের ক্লাস ছিল। এই বিভাগের ৭ জন পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ক্লাস করেন। তবে অর্ণব বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি। তাঁর জন্য অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুটি বিষয়ে ক্লাস হয়। দুটি ক্লাসেই ভার্চুয়ালি হাজির ছিলেন অর্ণব। বর্ধমান জেলা সংশোধনাগার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে অর্ণবের জন্য অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। আপাতত ভার্চুয়ালি ক্লাস করবেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগের প্রধান তনভির নাসরিন বলেন, "অনলাইন মাধ্যমে ক্লাস করেছেন অর্ণব। আপাতত অনলাইন মাধ্যমেই অর্ণবের ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে যেভাবে নির্দেশ মিলবে পরবর্তীকালে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
[আরও পড়ুন: প্রাণ বাজি রেখে সাঁতরে ৩ মহিলাকে উদ্ধার, মেমারির পুলিশকর্তাকে কুর্নিশ]
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে গিয়ে পিএইচডির প্রথম দিনের ক্লাস করেছেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অর্ণব। দেশের মধ্যে প্রথম কোনও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পিএইচডি শুরু করলেন। অন্যান্য পড়ুয়াদের পাশে বসে ক্লাস করেছেন, পড়ার ফাঁকে গল্প করেছেন, আবার বিরতিতে একসঙ্গে বসে ক্লাসরুমে টিফিনও করেছেন। ক্লাসরুমে পঠনপাঠনও স্বাভাবিক ছন্দে হয়েছে। একসময় বিজ্ঞানের (ইঞ্জিনিয়ারিং) ছাত্র অর্ণব এখন কলা বিভাগের পিএইচডির ছাত্র।
একসময়ের মাওবাদী নেতা অর্ণবের বিরুদ্ধে শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলার অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় যাবজ্জীবন সাজাও হয়েছে। তার পর সংশোধনাগারে থেকেই অর্ণব ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার জন্য আবেদন করেন। ইন্টারভিউয়ের পর মেরিট লিস্টে প্রথম স্থান দখল করেন তিনি। কাউন্সেলিং-এর দিন আচমকাই স্থগিত করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য গৌতম চন্দ্র কারা দপ্তরে চিঠি দিয়ে জানতে চান অর্ণব কীভাবে ক্লাস করবেন। জট কাটাতে প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ উপাচার্যের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তার পর জট কাটে। ১৬ জুলাই কারা দপ্তরের একটি চিঠিতে ফের জটিলতা তৈরি হয়। তখনও হস্তক্ষেপ করেন কুণাল।