সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৃষকদের আয় বাড়ানো নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার লম্বা-চওড়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) দাবি করেছিলেন, ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের কৃষকদের আয় দিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে তাঁর সরকার। অথচ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সেই ডেডলাইনের দু’বছর আগে দাঁড়িয়েও বাস্তব ছবি যা বলছে, সেটা মর্মান্তিক বললেও কম বলা হয়। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে প্রতিদিন দেশে কৃষির সঙ্গে যুক্ত অন্তত ৩০ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর অর্ধেক কৃষক, অর্ধেক ক্ষেতমজুর।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে দেশে প্রতিদিন অন্তত ১৫ জন করে কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। একই সঙ্গে বাড়ছে কৃষির উপর নির্ভরশীলদের আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা। ২০২১ সালে প্রতিদিন অন্তত ১৫ জন করে ক্ষেতমজুরও আত্মহত্যা করেছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর (NCB) রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে ১০ হাজার ৮৮১ জন কৃষক ও ক্ষেতমজুর আত্মঘাতী হয়েছেন। অর্থাৎ, কৃষি ক্ষেত্রে প্রতি দিন গড়ে ৩০ জন করে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে কৃষকের সংখ্যা ৫ হাজার ৩১৮ জন। এবং ক্ষেতমজুরের সংখ্যা ৫ হাজার ৫৬৩ জন।
[আরও পড়ুন: জ্ঞানবাপীর ‘শিবলিঙ্গে’র কার্বন ডেটিং নয়, আদালতে ধাক্কা হিন্দুপক্ষের]
২০১৭ সালের পর দেশে একবছরে আত্মহত্যার নিরিখে এটাই রেকর্ড। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে কৃষকদের আত্মহত্যার সংখ্যাটা অনেকটা বেশি। ঘটনাচক্রে ২০২১ সালেই দেশে কৃষক আন্দোলন তীব্র আকার নিয়েছিল। কেন্দ্র সরকারের আনা কৃষি আইনের (Farm Law) বিরুদ্ধে পথে নেমে আন্দোলনে শুরু করেন কৃষকরা। মাসের পর মাস দিল্লি সীমান্তে ধরনা এবং বিক্ষোভ দেখান হাজার হাজার কৃষক (Farmers)। সেই আন্দোলনের চাপে বাধ্য হয়েই শেষপর্যন্ত কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হয় কেন্দ্রকে। ২০২১ সালে এই বিরাট সংখ্যক কৃষকদের আত্মহত্যার অন্যতম কারণ যে এই কৃষি আইন, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
[আরও পড়ুন: এবার পরোটা খেলেও দিতে হবে ১৮ শতাংশ GST! ‘ইংরেজরাও এত কর বসায়নি’, তোপ বিরোধীদের]
বস্তুত, তিরিশ বছর ধরেই কৃষক আত্মহত্যা এদেশের একটা জ্বলন্ত সমস্যা। ঋণের বোঝায় জর্জরিত কৃষকরা বহু ক্ষেত্রেই কীটনাশক খেয়ে বা অন্যভাবে নিজেদের জীবনকে শেষ করে দিতে বাধ্য হন। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই অবস্থা বদলানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, কৃষকদের অবস্থা এতটুকুও বদলায়নি।