কিংশুক প্রামাণিক: রাজধানীতে নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) মুখোমুখি হওয়ার আগে আচমকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। উসকে গেল রাষ্ট্রপতি ভোটকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের একজোট হওয়ার জল্পনাও। বিচারপতিদের সম্মেলনে যোগ দেওয়া ছাড়া ঝটিকা সফরে আর কোনও কর্মসূচিই ছিল না মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি সেটা নিজেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে কলকাতা থেকে তিনি রওনা হওয়ার পর রাজধানীতে রাজ্যের কার্যালয়ে বার্তা আসে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী দেখা করতে চান। দিল্লিতে নামতেই সেই খবর মমতাকে দেওয়া হয়।
অতীতে রাজধানী এলেই ১৮৩ সাউথ অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে মমতার (Mamata Banerjee) কাছে আসতেন কেজরি। ইদানীং তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে চলছিলেন তিনি। গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ও কেজরির আম আদমি পার্টি একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়ে লড়েছিল। বাংলাতেও সংগঠন গড়ার কাজ শুরু করেছে তারা। তদুপরি শুক্রবার কেজরি নিজেই সময় চাওয়ায় মমতা তাঁকে এদিন সন্ধেয় আমন্ত্রণ জানান। কারণ, শনিবার তিনি ফিরে যাবেন। প্রায় আধ ঘণ্টা ছিলেন কেজরি। সৌজন্যের ফুল বিনিময় হয়। তারপর একান্ত কথা। তবে কী বিষয়ে দু’পক্ষ কথা বললেন তা নিয়ে কেউ মুখ না খুললেও, ৪১ ডিগ্রি তাপদাহে পোড়া দিল্লিতে নানা জল্পনা শুরু হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: পাটচাষিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি অর্জুন সিংয়ের]
যেহেতু রাষ্ট্রপতি ভোটকে সামনে রেখে বিরোধীদের এক হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে, সেই প্রেক্ষিতে এই বৈঠক বাড়তি মাত্রা যোগ করে। বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে বরাবর মমতার নেতৃত্বকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন কেজরি। ফলে আবার দু’জন বৈঠকে বসা তাৎপর্যপূর্ণ। আচমকা কেজরির (Arvind Kejriwal) মমতার কাছে যাওয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপিও। তৃণমূলনেত্রীই যে বিরোধী জোটের ভরকেন্দ্র, তা ফের স্পষ্ট। এদিকে আজ নরেন্দ্র মোদির মুখোমুখি মমতা। পেট্রল-ডিজেলের কর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ উড়িয়ে তোপ দাগার পর বিকেলে দিল্লি এসে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার মোদির সঙ্গে মমতার দেখা হবে।
কিন্তু একান্ত কথা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। বিজ্ঞানভবনে বিচারপতিদের সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সভাপতিত্ব করবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। সব হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। স্বভাবতই এখানে কথা হওয়ার পরিস্থিতি থাকবে না। সম্মেলনে কোনও মুখ্যমন্ত্রীই বক্তা নন। ফলে মমতারও ভাষণ থাকছে না। তবে বিচারব্যবস্থার সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন বলে গুরুত্ব দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে কলকাতা থেকে গিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস (Arup Biswas)। আগেই এসে গিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। কর্মসূচি সেরে শনিবার সন্ধেয় কলকাতা ফিরে যাবেন মমতা।