সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এতদিন জমিয়ে রাখা শুকনো খাবারই ছিল সম্বল। সেসব আর ক’দিনই বা খেতে ভাল লাগে? অথচ মহাশূন্যে ভেসে থাকার সময়টা তো এমনই। প্রাথমিক ভাল লাগাটুকু শেষ হয়ে গেলে অনন্ত মনখারাপ। বিশেষত যদি স্বাদেন্দ্রিয় পরিতৃপ্ত না হয়, তবে তা বিষণ্ণতা বাড়বেই। তবে এবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) থাকা নভোচরদের মুখে হাসি ফুটতে চলেছে। তাঁদের জন্য টাটকা ফলমূল, খাবার নিয়ে মহাকাশে পৌঁছে যাচ্ছে কার্গো রকেট। জানা গিয়েছে, স্পেস এক্সের (Space X) তরফে একটি রকেট পাঠানো হচ্ছে সেখানে। তাতে অন্যান্য সরঞ্জামের সঙ্গে থাকবে টাটকা আপেল, কমলালেবু-সহ বেশ কিছু ফল, পানীয়, খাবার।
বেসরকারি মহাকাশ অভিযানে বেশ কয়েকমাস ধরেই কাজ করছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা স্পেস এক্স। নভোচর না পাঠালেও, আপাতত কার্গো রকেট অর্থাৎ পণ্যবাহী আকাশযান পাঠানো হচ্ছে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে। করোনা আবহে গত বছর থেকেই লাগাতার এভাবে রকেট যাতায়াত করছে মহাশূন্যে। এবার ২২ তম যাত্রা তাদের। আমেরিকার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বৃহস্পতিবার একটি ফ্যালকন-৯ (Falcon-9)রওনা হবে ISS-এর উদ্দেশে। তাতে প্রায় ৩৩০০ কেজি সামগ্রী পৌঁছে যাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে।
[আরও পড়ুন: ‘মেঘের খেলা আকাশ পারে’, মঙ্গলের মেঘলা দিনের অসামান্য ছবি শেয়ার করল নাসা]
তারই মধ্যে রয়েছে আকর্ষণের আসল ভাণ্ডার। স্পেস এক্স সূত্রে খবর, নভোচরদের জন্য টাটকা আপেল, লেবু, কমলালেবু, পিঁয়াজ, অ্যাভোকাডোর মতো ফলের ঝুড়ি নিয়ে হাজির হবে রকেটটি। শুধু কি তাই? চা, কফি-সহ অন্তত ১৫ রকমের খাবারের কৌটো। তা থেকে নিজেদের পছন্দমতো অন্তত ৩০ রকমের খাবার তৈরি করে নিতে পারবেন নভোচররা। মনে করা হচ্ছে, রসাস্বাদনের সাধ পূরণ হওয়ায় এবার ফের উদ্দীপ্ত হয়ে উঠবেন মহাকাশচারীরা। হাজার যন্ত্রপাতির ভিড়েও প্রাণ ফিরে আসবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে।
[আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ কত বছর হতে পারে মানুষের আয়ু? নয়া গবেষণায় জানালেন বিজ্ঞানীরা]
মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্মের নিয়ন্ত্রণ এতদিন মূলত নাসার হাতে ছিল। সম্প্রতি আমেরিকা ও অন্যান্য দেশের কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এসেছে। মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্রেরও এবার বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে। তাতে সবচেয়ে এগিয়ে স্পেস এক্স। নাসাও যোগ্যতার ভিত্তিতে তাদের উপর ভরসা করেছে। ফলে এই সংস্থার কাজ এগিয়েছে তরতরিয়ে। আপাতত কার্গো অর্থাৎ পণ্য নিয়ে মহাকাশ স্টেশনে যাতায়াত করছে এই সংস্থার তৈরি অত্যাধুনিক মডেলের রকেট। এরপর স্পেস এক্সের লক্ষ্য, ছোট ছোট প্রাণী নিয়ে মহাকাশে যাওয়ার। তাতে ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি’ পরীক্ষা করা হবে। তবে সে অনেক দূরের যাত্রা। আপাতত ফল, খাবার নিয়ে কার্গো রকেটের আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাত্রার খবরেই চাঙ্গা বিজ্ঞানীরা। অপেক্ষা এখন, খাদ্যভাণ্ডার নিয়ে নিরাপদে ISS-এ রকেটের অবতরণ। বৃহস্পতিবারই সেই নির্দিষ্ট দিন।