সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গ্রহ বলতে ছোটবেলাকার ধারণা অনুযায়ী, সাধারণত গোল কিংবা উপবৃত্তাকার। যেমন পৃথিবী। কিন্তু এবার মহাকাশের গায়ে টেলিস্কোপের চোখ দিয়ে বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেলেন এক অদ্ভুতদর্শন গ্রহ। যা দেখে বিস্মিত তাঁরা। বলা হচ্ছে, এই প্রথম সৌরজগতে এমন গ্রহের সন্ধান মিলল, যা কি না খানিক এবড়োখেবড়ো আকারের (Deformed Planet)। শুধু তাই নয়, এর গঠনগত বৈশিষ্ট্য এবং জন্মের নেপথ্য কাহিনিও অন্যদের তুলনায় ভিন্ন। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মত, এই গ্রহ সম্পর্কিত তথ্য অনেক নতুন ধারণার জন্ম দিতে চলেছে।
WASP-103b – নব আবিষ্কৃত গ্রহের নাম এটাই রেখেছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, যে নক্ষত্রের খুব কাছ দিয়ে গ্রহটি পাক খেয়ে চলেছে তার নাম WASP-103। তাই শনাক্তকরণের সুবিধার জন্য এই নামকরণ। সাধারণত মহাকাশে এভাবে সামঞ্জস্য রেখেই নামকরণ করা হয়ে থাকে। WASP-103 নক্ষত্রটি সূর্যের (The Sun) চেয়ে ১.৭ গুণ বড় এবং তাপমাত্রা সূর্যের চেয়ে অন্তত ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। আর এর খুব কাছাকাছিই অবস্থান নব আবিষ্কৃত গ্রহটির। বিজ্ঞানীদের অনুমান, ঠিক এই কারণেই নক্ষত্র ও গ্রহের পারস্পরিক পার্শ্বটান এতটাই বেশি যে গ্রহটির অভ্যন্তর ভাগে তার ব্যাপক প্রভাব আকার বদল করে দিয়েছে। আর তাতেই গ্রহটি হয়ে উঠেছে ডিফর্মড প্ল্যানেট।
[আরও পড়ুন: ৫০ বছর ধরে জ্বলছে আগুন! অবশেষে বন্ধ হচ্ছে ‘নরকের দরজা’]
আরেকটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলে বিষয়টা দাঁড়ায় আমাদের পৃথিবীর জোয়ার-ভাঁটার মতো। সূর্য, চন্দ্র, পৃথিবীর অবস্থান এবং পারস্পরিক টানের জন্য যে ঘটনা ঘটে থাকে, এখানেও তেমনই। WASP-103 নামের নক্ষত্র এবং WASP-103b গ্রহের মধ্যে ঠিক তেমনই জোয়ার-ভাঁটার টান কাজ করছে এবং তা অত্যন্ত বেশি। যদিও সেই বল পরিমাপ করা এখনও সম্ভব হয়নি। WASP-103b গ্রহটি বৃহস্পতির চেয়ে অন্তত দেড়গুণ বড় এবং আবর্তনকাল মাত্র একদিন। অর্থাৎ একদিনে সে নক্ষত্রটিকে একবার পাক খেতে পারে।
[আরও পড়ুন: মহাকাশে গবেষণায় নয়া যুগ, পুরোদমে কাজ শুরু শক্তিশালী জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের]
WASP-103b গ্রহ আবিষ্কারের পর জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অনুমান, কোন মহাজাগতিক টানের ফলে গ্রহের আকার এমন অদ্ভুত হয়ে যায়, তা বোঝা যাবে। ‘জার্নাল অফ অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’ এ এই গ্রহ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এই অনুমান বিজ্ঞানীমহলের। আপাতত WASP-103b সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে উদগ্রীব তাঁরা।