অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: তাদের দেখা নাইরে, তাদের দেখা নাই! অথচ এটাই তো তাদের এখানে আসার সময়। শীতের মরসুমে বিলে পরিযায়ী পাখিদের দেখা নেই। অথচ একটা সময় ছিল যে, শীত পড়তেই ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখি আসত মুর্শিদাবাদের ডোমকল ও জলঙ্গির সীমান্তের খয়রামারি বিলে। কিন্তু এবার তেমন নেই! মুর্শিদাবাদ জেলা বনদপ্তরের সূত্রে খবর, জাঁকিয়ে শীত না পড়ার জন্যই এমন অবস্থা হয়েছে। স্থানীয় মানুষ অবশ্য তা মনে করেন না।
এলাকার কৃষক মাইনুদ্দিন শেখ জানান, “বেশ কয়েক বছর ধরেই খয়রামারি বিলে পরিযায়ী পাখিদের আগমন কমতে শুরু করেছে। তার প্রধান কারণ শীতের মরশুমে নিত্যই পিকনিক পার্টির ডিজে, মাইকের দাপটে বিলকে আর নিরাপদ মনে করছে না পাখিরা।" তাছাড়া খয়রামারি বিলে দীর্ঘদিন মাছ ছাড়া হয় না। কয়েক বছর ধরে জেলা ভূমি দপ্তর থেকে বিল লিজ না দেওয়ায় খয়রামারি মৎস সমবায় সমিতিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে খাবারের অভাবটাও পাখি না আসার একটা কারণ। ইতিমধ্যেই ওই বিলে হাজার দু'য়েক পাখি এসেছে। তবে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে আরও বাড়বে বলে আশা সকলের। কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় বন দপ্তরের এক আধিকারিক সাবির অহমেদ জানান, "করোনা পরবর্তী সময়েও বিলে প্রায় ১৪ হাজার পরিযায়ী পাখি এসেছিল। ২০২৩ সালে হাজার পাঁচেক। এবার পাখিদের ভীড় না থাকায় গণনাই শুরু করা হয়নি।"
খয়রামারি বিল এলাকার বড় সম্পদ। কিন্তু সরকারি কোনও পরিকল্পনা না থাকায় খয়রামারির বিলে পরিযায়ী পাখি সংখ্য়া কম। স্থানীয়রা জানান, এই বিলকে কেন্দ্র করে দিব্যি একটা ভালো পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা যায়। আবার বিলের একটা দিক সংরক্ষণ করে পরিযায়ী পাখীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রও গড়ে তোলা যায়। কিন্তু সেই পরিকল্পনার লোক নেই। এলাকার জেলাপরিষদ সদস্য ও মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের উপাধক্ষ্য তজিমউদ্দিন খান জানান, "বিলের বিষয়টি ভূমি দপ্তর দেখে। এখন বিল কি অবস্থায় আছে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ ভাবা হচ্ছে।"তবে পরিযায়ী পাখি কমে যাওয়ায় হতাশ পরিবেশপ্রেমীরা।