অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: বোমা বাঁধতে গিয়ে অঘটন। মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়ার খয়েরতলায় মৃত্যু হল অন্ততপক্ষে ৩ জনের। আরও বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন বলেই খবর। তবে তাঁদের কারও খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা। খবর দেওয়া হয়েছে বম্ব স্কোয়াডকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতদের নাম মুস্তাকিন শেখ (২৮), বাড়ি মহাতাব কলোনিতে। মামন মোল্লা (৩০) ও সাকিরুল ইসলাম (৩২) বাড়ি খয়েরতলায়। মামন মোল্লার বাড়িতেই বোমা বাঁধা হচ্ছিল। বোমা বিস্ফোড়নের ঘটনায় পাকা ঘরের ছাঁদ উড়ে গিয়েছে। ঠিক কী কারণে ওই বোমা বাঁধা হচ্ছিল পুলিশ তা ক্ষতিয়ে দেখছে। রবিবার গভীর রাতের ওই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। বহু মানুষ আতঙ্কিত। ঘটনাস্থল থেকে দুশো মিটার দুরের এক যুবক জানান, “তখন লেপের মধ্যে শুয়ে মোবাইল দেখছিলাম। হঠাৎ করে বিকট শব্দে টিনের চাল ঝনঝনিয়ে ওঠে। বাইরে বেরিয়ে বুঝার টেষ্টা করি কোনদিকে শব্দ হল। আমার মতো পাড়ার আরও লোক বেরিয়ে পড়েন। আর তার কিছুক্ষণ পরেই জানতে পারি খয়েরতলায় মামনের বাড়ি উড়ে গিয়েছে। পরে আরও জানতে পারি দু-তিনজন বোমা ফেটে মারা গিয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতরা সকলেই ফেনসিডিল পাচারের সঙ্গে জড়িত। কিছুদিন আগে ফেনসিডিল পাচার নিয়ে অপর এক গোষ্ঠীর সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল। তারা মারও খেয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওই মারের বদলা নেওয়ার জন্যই মামন মোল্লার বাড়িতে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। সেই সময় অসাবধানতা বশত তা ফেটে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বোমায় কারও হাত উড়ে গিয়েছে তো কারও হাত মুখ বুক ক্ষত বিক্ষত। চোখে দেখা যায় না। ওই অবস্থায় স্থানীয় মানুষ মামন মোল্লা ও সাকিরুল ইসলামকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ জানায় হাসপাতালে যাওয়ার পথেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। ওই মৃতদেহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।
অন্যদিকে ঘটনাস্থলেই গুরুতর জখম অবস্থায় পড়েছিল মোস্তাকিন শেখ। ঘটনাস্থলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে পাঠালে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মৃত তিনজনের বিরুদ্ধেই পুলিশের খাতায় অনেক মামলা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এলাকায় তাদের পরিচয় কুখ্যাত ফেনসিডিল পাচারকারী হিসেবে। ঘটনাস্থলে আরও বোমা রয়েছে আশঙ্কায় ওই বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। খবর দেওয়া হয়েছে বম্ব স্কোয়াডকে।