সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার পর ইউরোপে (Europe) ফের ছড়াচ্ছে সন্ত্রাসের বিষ। একাধিক দেশে জঙ্গি হামলার ঘটনা সামনে আসছে। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন ইউরোপের অন্যতম শান্তিপ্রিয় দেশ ডেনমার্কের (Denmark) শপিং মলে এলোপাথাড়ি গুলি (Shooting)। রবিবার রাজধানী কোপেনহেগেনের ব্যস্ত এক শপিং মলে ঢুকে তাণ্ডব চালায় বন্দুকবাজ। এলোপাথাড়ি গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যায় অন্তত তিনজনের শরীর। গুরুতর জখম আরও তিনজন। পুলিশের হাতে অবশ্য ধরা পড়েছে আততায়ী। ২২ বছরের ধৃত যুবক ডেনমার্কেরই বাসিন্দা বলে খবর পুলিশ সূত্রে।
রবিবার কোপেনহেগেনের অন্যতম ব্যস্ত শপিং মলে (Shopping Mall) আচমকাই ঢুকে পড়ে এক বন্দুকবাজ। তার পরনের ছিল হাফ প্যান্ট, স্লিভলেস শার্ট, হাতে রাইফেল (Rifle)। সেই রাইফেল দিয়ে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। ভিড়ের মাঝে গুলির শব্দ শুনে ত্রস্ত হয়ে পড়েন ক্রেতারা। পালাতে গিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। পদপিষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ততক্ষণে বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েছেন। পুলিশ জানায়, তাঁদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে ঘটনাস্থলেই। নিহতদের মধ্যে ২ জনই যুবক বলে জানা গিয়েছে। জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর।
[আরও পড়ুন: ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের আসল বিপদ বহু, কী বলছে প্রতিরক্ষা মহলের সূত্রভিত্তিক অন্তর্তদন্ত?]
কোপেনহেগেনের পুলিশ ইন্সপেক্টর সোরেন থমাস জানাচ্ছেন, “আমরা সন্ত্রাসবাদী হামলার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছি না। আততায়ী একাই ছিল। সম্ভবত লোন উলফ অ্যাটাক। সবটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” রবিবার শপিং মলে কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল। তা দেখাতে মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী হান্স ক্রিশ্চিয়ান স্টোলজ। চোখের সামনে ভয়াবহ দৃশ্য দেখেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “এটা খাঁটি সন্ত্রাস। আপনি ভাবতেও পারবেন না কীভাবে ছেলেটা সবার দিকে তাক করে গুলি ছুঁড়ছিল। এটাও সম্ভব!” অভিজ্ঞতার কথা ভাবলেই শিউরে উঠছেন স্টোলজের মতো আরও অনেকে।
[আরও পড়ুন: আর্তনাদেও গলল না মন, জমি বিবাদে আদিবাসী মহিলার গায়ে আগুন, ভিডিও করল ৩ দুষ্কৃতী]
স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলি অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় (Peaceful)। ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ের মতো জায়গা সন্ত্রাস থেকে অনেকটাই দূরে। তাই রবিবারের ঘটনার কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না অনেক ড্যানিশই। তাঁদের দেশেও এমন ভয়ংকর হামলা হতে পারে, সেই বাস্তব যেন মানতেই পারছেন না তাঁরা। এর আগে ২০১৫ সালে ডেনমার্কে বন্দুকবাজের হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২ জন। আহত হন ৫ পুলিশ অফিসার। পুলিশের পালটা গুলিতে আততায়ীরও মৃত্যু হয়। আর তারপর ২০২২ সালে এই ঘটনা। ইউরোপের নানা জায়গায় ইদানিং সন্ত্রাসের বীজ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। লন্ডন, প্যারিসের মতো শহরে রাস্তাঘাটে ছুরি হামলা ঘটছে আকছার। এসব জায়গার শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসই (White Supremacy) কি ছড়িয়ে পড়ছে গোটা ইউরোপে? সেক্ষেত্রে জেহাদিদের মূল টার্গেট কারা? উদ্দেশ্যই বা কী? এসব প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। বরফশুভ্র শান্তির দেশ ডেনমার্কের মাটি যে তিন তিনটি নিরীহ প্রাণের তাজা রক্তে রক্তাক্ত হয়ে উঠল!