সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শক্তিশালী সৌরঝড়ের হাত ধরেই এসেছিল সুন্দর। অপূর্ব আলোকছটায় ভরে গিয়েছিল মেরু প্রদেশের আকাশ। আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অংশ থেকে সেই মেরুপ্রভা দেখে বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন অনেকেই। স্বপ্নের মতো মনে হয়েছিল। সোশাল মিডিয়ার পাতায় চোখ রাখলেই সেই আশ্চর্যের অনুভূতি টের পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু যে দীপ্তি একেবারেই সুমেরু, কুমেরুর নিজস্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, তা কীভাবে পূবের আলো হয়ে উঠল? কীভাবে লাদাখ থেকে দৃশ্যমান হল 'অরোরা বোরিয়ালিস'? এ কি জাদু ছাড়া সম্ভব? সত্যি যা ঘটল, তা মহাজাগতিক জাদুই বটে।
আয়ারল্যান্ডের আকাশে অরোরা বোরিয়ালিস। ছবি: সোশাল মিডিয়া।
আসলে মহাবিশ্বের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভয়ংকর সৌরঝড় (Solar Storm)। যার প্রভাবে স্যাটেলাইট সিস্টেমে বড়সড় প্রভাব পড়তে পারত, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত পাওয়ার গ্রিড, জিপিএস। বরাতজোরে সামান্য বিঘ্ন ছাড়া সেসব কিছুই ঘটেনি। তবে ঝড় পরবর্তীতে যা ঘটেছে, তা মহাজাগতিক বিস্ময়! সৌরঝড়ের পরই অপার্থিব আলোয় ভরেছে সুমেরু-গগন। শুধু তাইই নয়, শনিবার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ভারতের লাদাখের (Ladakh) আকাশেও দেখা গিয়েছে বেগুনি, সবুজ, লালের মিশ্র রং। যার নেপথ্যে রয়েছে মহাকাশ বিজ্ঞানের অপূর্ব খেলা। বলা ভালো, সৌরবিজ্ঞানের জটিল অঙ্ক।
[আরও পড়ুন: ভয়ংকরের হাত ধরে সুন্দরের আবির্ভাব! সৌরঝড়ের পর আকাশে ছড়িয়ে পড়ল মেরুপ্রভা]
কী সেই বিজ্ঞান? সৌরঝড়ের সময় সূর্য-শরীর থেকে করোনারি মাস ইজেকশন (CME) বেরয়। যা আসলে বিপুল তাপ ও আলোর সমন্বিত রশ্মি। এই CME-র প্রভাবেই জিপিএস বা পাওয়ার গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবারের সৌরঝড়ের দাপট এতটাই বেশি ছিল যে করোনারি মাস ইজেকশনে নির্গত সৌরকণা দ্রুত বেগে ধেয়ে এসেছে পৃথিবীর দিকে। বিজ্ঞানীদের মতে, তা সেকেন্ডে ৮১৫ কিলোমিটার, যার সাধারণ বেগ ৭০০ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ডে। প্রাথমিক বিজ্ঞান বলে, লাল, কমলা, হলুদ আলো বায়ুমণ্ডলের সর্বোচ্চ স্তরে প্রতিফলিত হয়ে চোখে পড়ে। আর তার অপূর্ব সংমিশ্রণে মেরুপ্রভা। তাই তার রংও এমন মিশ্রিত। লাদাখ উচ্চ অক্ষাংশে অবস্থিত হওয়ায় সেখানকার আকাশে প্রতিফলিত হয়েছে অরোরা বোরিয়ালিস (Aurora Borealis)। সৌরঝড় ১২ মে অর্থাৎ রবিবার পর্যন্ত দাপট দেখিয়েছে। ফলে এই সংক্ষিপ্ত সময়েই এই বিরল দৃশ্যে সাক্ষী হতে পেরেছেন পৃথিবীবাসী।