নন্দন দত্ত, সিউড়ি: রাস্তায় নয়, এবার পঞ্চায়েত যুদ্ধের (Panchayat Election) ময়দানে সম্মুখ সমরে টোটো এবং অটোচালক। বীরভূমের (Birbhum) সাঁইথিয়ার হরিসরা পঞ্চায়েতের ৭৩ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত লড়াই জমে উঠেছে তাঁদের ঘিরে। টোটোচালক সুদীপ্ত বাগদি তৃণমূল (TMC) প্রার্থী। আর অটোচালক রামপ্রসাদ মাহারের স্ত্রী পাপিয়া মাহার আদিত্য লড়ছেন বিজেপির (BJP) হয়ে। পঞ্চায়েতে আবাস যোজনার দুর্নীতি নিয়ে সরব গ্রামবাসীরা। এমনকী প্রার্থী সুদীপ্ত বাগদি নিজেও সে কথা স্বীকার করছেন। যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের জন্য দলের বদনাম হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তবে এসবের মধ্যে দিয়ে এই ফুলে ফুলে লড়াইয়ে কে হবে জয়ী, সেটাই এখন দেখার।
সাঁইথিয়ার (Saithia) নতুন ব্রিজ পেরিয়ে হাটতলা থেকে মহম্মদবাজার যাওয়ার রাস্তায় ডানদিকের ঢালু রাস্তা ধরেই সুদীপ্ত আর রামপ্রসাদের অটো-টোটো দুটোই গ্রামে ঢোকে। গ্রামের ভিতর দিয়ে পাকা ঢালাই রাস্তা। তারই দু’পাশে বসতি। গ্রামে ঢুকতেই সুদীপ্তর বাড়ি। রাজ্যের ৭৪ টি প্রকল্প নিয়ে গ্রামের বাড়ি ঘুরছেন। তিনি নিজে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ সমেত মোট দুটি প্রকল্প পেয়েছেন। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে জিতলে গ্রামবাসীদের জন্য সব প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে চান।
[আরও পড়ুন: আরজি মেনে বাকি ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী পাঠাচ্ছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, হাই কোর্টে জানাল কমিশন]
সকাল থেকে সুদীপ্তর অনেক কাজ। বাড়ির কাজ সেরে নিজের টোটো নিজে হাতে জল দিয়ে পরিষ্কার করে বেরিয়ে পড়েন নিজের কাজে। এরই মাঝে তৃণমূলের হয়ে দলের কাজ করেন। গত দশ বছর ধরে তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত। টোটো কিনেছেন দু’বছর। গ্রামের শেষ প্রান্তে যেখানে ঢালাইয়ের রাস্তা শেষ হয়েছে সেখানেই বিজেপি প্রার্থী পাপিয়া মাহার আদিত্যর বাড়ি। সরকারি কোনও প্রকল্প তাঁদের জোটেনি। বাড়িতে গবাদি আছে। আর সম্পদ বলতে স্বামী রামপ্রসাদের টোটো (Toto)। মজার কথা, বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য যেখানে শাসকদলের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারির অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেখানে পাপিয়াকে কেউ কিন্তু এধরনের হুমকি দেয়নি।
[আরও পড়ুন: বাড়ির দুই পোষ্যকে নিয়ে হাঁটতে বেরিয়ে নিখোঁজ কিশোর, ঘরে ফিরল ৮ বছর পর!]
দু’জনেই দাবি করেছেন, তাঁরা ভোট চাইছেন গাড়িতে যাত্রী ধরার মতন। দু’জনেই আধুনিক গ্রাম পরিষেবার অঙ্গ। একজনের বাহন চলে ব্যাটারিতে। অন্যজনেরটা তেলে। একজন পরিবেশ বান্ধব। অন্যজন সময়োপযোগী। যাঁরা টোটো-অটোচালকদের পছন্দ করেন, তাঁরা তাঁদের গাড়িতে চড়েন। তাদের দু’জনেই ভাড়া নিয়ে লক্ষ্যে যাত্রীদের পৌঁছে দেন।
দু’জনের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। তবে দু’জনেই জয়ী হতে চান। ললিয়াপুর গ্রামের ঢালাই রাস্তা ধরে তাই ছুটছে অটো-টোটো। কে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছয়, সেটা দেখার জন্য ফলাফলের অপেক্ষা। আর সেইদিন দু’জনেই নিজেদের গাড়িতে চেপে অপেক্ষা করবেন। যিনি জয়ী হবেন, তাঁর গাড়ি ছুটবে হরিসরা পঞ্চায়েতের পথে।