সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমেই যেন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত দেশ। দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ৪ লক্ষের কাছাকাছি। কিন্তু সে তো কেবল পরিসংখ্যান। সংখ্যার বিচারের চেয়েও করুণ ছবি তুলে ধরছে কিছু কিছু মর্মান্তিক ঘটনা। তা যেন গোটা দেশের দুরবস্থার করুণ প্রতিচ্ছবি। তেমনই এক ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রে (Maharashtra)। মৃত মায়ের পাশে পড়ে রইল দুধের শিশু। টানা দু’দিন দুধ বা জল কিছুই না খেয়ে ছিল সে। কোভিডের আতঙ্কে কেউই আসেনি সেখানে! এমনকী পরে শিশুটি উদ্ধার হওয়ার সময়ও তাকে কোলে নিতে চায়নি কেউ। অতিমারীর ভয় এমন ভাবে গ্রাস করেছে সকলকে।
ঠিক কী হয়েছিল? মহারাষ্ট্রের পিম্পরির চিঞ্চাওয়াড়। সেখানেই থাকত ওই পরিবার। মহিলার স্বামী চাকরি সূত্রে উত্তরপ্রদেশে থাকেন। বাড়িতে ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে থাকতেন ওই মহিলা। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ার পর করোনার সন্দেহে তাঁর কাছে কেউই আসতেন না। কার্যত ‘একঘরে’ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর গত শনিবার মৃত্যু হয় তাঁর। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই কেউ খোঁজ না নেওয়ায় কেউই কোনও খবর পাননি। এইভাবে ২ দিন পেরনোর পর ঘর থেকে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করলে বাড়িওয়ালা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মৃতা মহিলা ও তাঁর সন্তানকে দেখতে পায়।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্র ও রাজ্যে ভ্যাকসিনের পৃথক দাম কেন? মোদি সরকারকে বিঁধল সুপ্রিম কোর্ট]
কিন্তু দুধের ওই শিশুর দায়িত্ব নিতে চাননি আশপাশের কেউই। করোনার ভয়ে সকলেই মুখ ফিরিয়ে নিলেও পিছিয়ে আসেননি দুই মহিলা কনস্টেবল। সুশীলা গাভালে ও রেখা ওয়াজে। প্রাথমিক ভাবে তাঁরাই খাদ্য ও শুশ্রুষায় চাঙ্গা করে তোলেন শিশুটিকে। সুশীলার কথায়, ‘‘আমার দুই সন্তান। একজনের বয়স ছয়। একজন আট। ওই ছোট্ট শিশুটিও আমার সন্তানের মতোই। ও এত তাড়াতাড়ি দুধ খাচ্ছিল, বুঝতে পারছিলাম বেচারি কতটা ক্ষুধার্ত।’’
কেমন আছে শিশুটি? রেখা জানাচ্ছেন, ‘‘সামান্য জ্বর ছিল। কিন্তু পরে করোনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে সে নেগেটিভ। আপাতত খাবারদাবার ও যচ্ন পেয়ে একেবারে সুস্থ।’’ শিশুটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি ক্রেশে। খবর দেওয়া হয়েছে তার বাবার কাছে। মৃতা মহিলার দেহ ময়না তদন্ত করতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট মিলেছে। তা থেকে জানা গিয়েছে, তিনি আদৌ করোনায় আক্রান্ত হননি।