সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশকে (Bangladesh) কাছে পেতে মরিয়া চিন। ভারতের প্রভাব খর্ব করতে ঢাকার জন্য ঋণের পসরা সাজিয়েছে বেজিং। একইসঙ্গে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে বেশ কয়েকটি চিনা বাণিজ্যিক সংস্থা। কিন্তু এহেন চিত্রের নেপথ্যে যে বাস্তব লুকিয়ে রয়েছে তা এবার স্পষ্ট। অভিযোগ, বিপুল অঙ্কের কর ফাঁকি দিচ্ছে বাংলাদেশে ব্যবসা করা চিনা সরকারি সংস্থাগুলি। এরফলে ধাক্কা খাচ্ছে রাজকোষ।
[আরও পড়ুন: বিয়ের ফাঁদে পা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়ার পথে রোহিঙ্গা তরুণীরা! আটক ৭৫]
এই রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে চিনা সংস্থাগুলির কর ফাঁকি সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ঘটনা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। বিশেষ করে, দেশে পরিকাঠামো নির্মাণে জড়িত ‘চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কার্পোরেশন’ (CRBC) সংস্থাটির অ্যাকাউন্টে অসঙ্গতি নজরে আসে। বলে রাখা ভাল, এই সংস্থাটির মালিকানা রয়েছে চিনের সরকারি সংস্থা ‘চায়না কমিউনিকেশনস কন্সট্রাকশান কোম্পানি’র হাতে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সরকারি পরিকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের জন্য কোর ফাঁকি দিয়ে কাঁচামাল আমদানি করেছে সংস্থাটি। এর ফলে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে রাজকোষের।
তবে চিনা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই চিনা সংস্থা ‘তিয়ানইয়ে আউটডোর কো লিমিটেড’ (TOCL) বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা প্রকাশ্যে আনে চট্টগ্রামের শুল্ক আধিকারিকরা। ওই চিনা সরকারি সংস্থাটির বিরুদ্ধে প্রায় ২১ কোটি টাকার কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। তুলো আমদানির নামে লুকিয়ে বিদেশি সিগারেট আনার অভিযোগও রয়েছে সংস্থাটির বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, দেশের রাজশাহী ডিভিশনে আউটডোর ক্যাম্প, পোশাক তৈরির ব্যবসা রয়েছে TOCL-এর।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই অভিযোগ ওঠে, ঋণের ফাঁদে ফেলে হাসিনা সরকারকে নিজেদের স্বার্থপূরণে ব্যবহার করতে চাইছে চিন। বিশ্লেষকদের মতে, পরিকাঠামো তৈরির নামে পাকিস্তানের মতোই বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে পারে বেজিং। বলে রাখা ভাল, গত কয়েকবছরে চিন থেকে নৌবাহিনীর জন্য টাইপ 053H3 ফ্রিগেট বা রণতরী কিনেছে বাংলাদেশ। বায়ুসেনার জন্য কে-৮ যুদ্ধবিমান, ট্রেনার বিমান ও সেনাবাহিনীর জন্য মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমও চিন থেকে কিনেছে ঢাকা। বিগত দশকে এর জন্য প্রায় আড়াই বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে হাসিনা প্রশাসন। কিন্তু সেই সমস্ত হাতিয়ারের গুণগত মান ও কার্যক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশের ফৌজ।