সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে আরও দুই যুদ্ধাপরাধী লিয়াকত আলি ও আমিনুল ইসলামকে মৃত্যু দণ্ডাদেশ দিল আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অভিযুক্ত দু’জনের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা চলছিল ট্রাইবুন্যালে৷ এই সাতটি মামলার সবকটিতেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে তারা৷ ফলে সোমবার অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিল বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷ এই রায় ঘোষণার এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে বিবেচনার জন্য আপিল করতে পারবে দোষীরা। তবে সেই জন্য আত্মসমর্পণ করতে হবে তাদের।
[‘ভোটে না লড়লে অস্তিত্ব মুছে যাবে বিএনপি-র’]
২০০৩ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত লিয়াকত আলি হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানা আওয়ামি লিগের সভাপতি ছিল। সভাপতি থাকাকালীন যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। একই ধরনের অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে রজব আলি ওরফে আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধেও৷ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন অপহরণ, নির্যাতন, লুটপাট, গণহত্যার মতো মানবতা বিরোধী সাতটি অপরাধে জড়িত থাকার। সোমবার সকাল ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৩১২ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু করেন বিচারপতিরা। এই মামলায় ট্রাইব্যুনালে ৩৫টি মামলা দায়ের হয়। দোষী ছিল ৮৫ জন। বিচার চলাকালীন মৃত্যু হয় ৫ জনের। ৫৩ জন যুদ্ধাপরাধীর সাজার হয়েছে।
[‘কওমি জননী’ উপাধিতে ভূষিত শেখ হাসিনা]
এই মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী ছিলেন রানা দাশগুপ্ত ও রেজিয়া সুলতানা চমন। সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামির পক্ষের আইনজীবী ছিলেন গাজি এমএইচ তামিম। ট্রাইব্যুনালের এই রায়কে স্বাগত জানান সরকার পক্ষের আইনজীবী রেজিয়া সুলতানা৷ জানা গিয়েছে, লিয়াকত আলি একাত্তরের মুক্তি যুদ্ধের সময় মুসলিম লিগের কর্মী ছিলেন। আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলি ওই সময়ে ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। ২০১৫-তে এই মামলার তদন্ত রিপোর্ট পেশ হয়। রিপোর্টে বলা হয়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিন থানা হবিগঞ্জ জেলার লাখাই, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর এবং কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে দেশবিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল এই দুই জন। ২০১৬-তে সন্দেহভাজন দুই যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হওয়ায়, পলাতক দেখিয়েই বিচার চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আদালত।