সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের সীতাকুণ্ডে ফের বিস্ফোরণের আতঙ্ক। প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালাচ্ছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের মতে, এখনও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তাই ফের বিস্ফোরণ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আর তেমনটা হলে প্রাণ বাঁচানো যাবে না।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের (Bangladesh) এই অগ্নিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই সোমবারও ডিপোর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে স্থানীয়দের। ডিপোতে কর্মরত শ্রমিকরা যে এলাকায় থাকতেন, সেখানকার ভাড়াবাড়িগুলি প্রায় খালি হয়ে গিয়েছে। এদিন সকালে দেখা যায়, বি এম কন্টেনার ডিপোর আশপাশের গ্রামগুলি থেকে আতঙ্কিত লোকজনের অনেকে আত্মীয়র বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বেশির ভাগ পরিবার তাদের শিশুদের স্বজনদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। ডিপো সংলগ্ন কেশবপুর, মোল্লাপাড়া-সহ অন্য গ্রামের বাসিন্দাদের অনেকেই এলাকা ছাড়ার প্রস্তুতি করছেন।
[আরও পড়ুন: ডিপোয় থাকা দাহ্য রাসায়নিকের কথা জানতই না দমকল, বাংলাদেশ অগ্নিকাণ্ডে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য]
এদিকে, কন্টেনার ডিপোতে ছড়িয়ে পড়া আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর ২৫০ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থলে কাজ করছে। এখনও পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ডিপোর রাসায়নিক পদার্থ যাতে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে না পড়ে, সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এসব রাসায়নিক যাতে সমুদ্রে ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকেও নজর রয়েছে। উদ্ধার অভিযান ও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে।
এছাড়া, সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার এবং নিরাপত্তা দলও মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মিলিটারি পুলিশও সহায়তা করছে। তাছাড়া, বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসায় সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল টিম গতকাল রাত থেকে কাজ করছে। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল ও সিএমএইচ-এ স্থানান্তরে সহায়তা করছে সেনাবাহিনী। এ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১৪ জন সদস্য-সহ চট্টগ্রাম সিএমএইচে ১৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সীতাকুণ্ডের বি এম কন্টেনার ডিপোতে ৫০০ মিটারের একটি টিন শেডের ভেতর মজুদ ছিল বিপুল পরিমাণ ‘হাইড্রোজেন পারোক্সাইড’ নামের দাহ্য রাসায়নিক। এছাড়া, আমদানি-রপ্তানি করা বিভিন্ন পণ্যও এ ডিপোতে রাখা হত। শনিবার রাতে আগুন লাগার পর রাত ১১টার দিকে সেখানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। তখন হাইড্রোজেন পারোক্সাইড বাইরে ছড়িয়ে যায়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। তাদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও আছেন। এদিকে এই অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের (Bangladesh Fire) ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস।