সুকুমার সরকার, ঢাকা: সীতাকুণ্ড কন্টেনার ডিপোয় অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে নাশকতা। এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী তথা আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ। তাঁর এহেন অর্থবহ মন্তব্যে তদন্তের গতিপথ আমূল বদলে যেতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকে।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের (Bangladesh) তথ্যমন্ত্রী মাহমুদ বলেন, “বি এম ডিপোর অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে আমি প্রথম থেকেই বলেছি সেখানে নাশকতা ছিল কি না, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। আস্তে আস্তে বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে। আপনারা জানেন, সিলেটের ট্রেনে আগুন লেগেছে টয়লেট থেকে, তারপর দাঁড়ানো অবস্থায় খুলনাগামী ট্রেনে আগুন লেগেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এগুলোর সঙ্গে নাশকতার যোগ আছে। আসলে সারা দেশে যে আনন্দ-উল্লাস, তা ম্লান করার জন্য, দেশে আতঙ্ক তৈরি করার জন্য এগুলো করা হচ্ছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।” তিনি আরও বলেন, “যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, গুজব রটিয়েছে, বিভিন্ন সময় গুজব রটায়, তারাই এই কাজগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তদন্ত হচ্ছে, তদন্তের মাধ্যমে সেটি আরও স্পষ্ট হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এগুলোর সঙ্গে নাশকতার যোগ আছে।”
[আরও পড়ুন: ট্রেনে করে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কনটেনার পরিবহণ চালু, রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা]
চলতি মাসের শুরুর দিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে সীতাকুণ্ডের বি এম কন্টেনার ডিপোয়। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় ৪৯ জনের। আহত হন বহু মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনীকে উদ্ধার কাজে নামানো হয়। অভিযোগ, সেখানে মজুত কন্টেনারগুলিতে রাসায়নিক পদার্থ থাকায় প্রবল বিস্ফোরণ ঘটে। এবার তথ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি সেখানে জেনেশুনেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল? যদি তাই হয়, তাহলে কে বা কারা এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছে?
তদন্তে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের বি এম কন্টেনার ডিপোতে ৫০০ মিটারের একটি টিন শেডের ভেতর মজুদ ছিল বিপুল পরিমাণ ‘হাইড্রোজেন পারোক্সাইড’ নামের দাহ্য রাসায়নিক। এছাড়া, আমদানি-রপ্তানি করা বিভিন্ন পণ্যও এ ডিপোতে রাখা হত। আগুন লাগার পর সেখানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। তখন হাইড্রোজেন পারোক্সাইড বাইরে ছড়িয়ে যায়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। তাদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও আছেন। এদিকে এই অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের (Bangladesh Fire) ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস।