সুকুমার সরকার, ঢাকা: বংশবিস্তার ও বড় আকারের ইলিশ পাওয়ার লক্ষে খোকা ইলিশ ধরা বন্ধ করতে পদক্ষেপ করা হয়েছিল। দুমাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হল না। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর বড় ইলিশ ধরতে নদীতে নেমেছিলেন মৎস্যজীবীরা। কিন্তু প্রত্যাশা মতো মাছ না পেয়ে মন খারাপ তাঁদের। তবে আশা ছাড়ছেন না মৎস্যজীবীরা।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার মধ্য রাত থেকে উঠে গিয়েছে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা। মাছের রাজার রাজধানী হিসেবে খ্যাত দক্ষিণের জেলা চাঁদপুর। সেখানকার হাইমচরের চরভৈরবী থেকে মতলবের ষাটনল পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা-যমুনার ৭০ কিলোমিটার নদী এলাকায় ইলিশ ধরতে নেমেছেন প্রায় ৫০ হাজার মৎস্যজীবী। দেশের অন্যতম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র চাঁদপুর মাছ ঘাটে ছিল ইলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন মাছের আমদানি। পদ্মা ও মেঘনা নদীর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মৎস্যজীবীরা ট্রলারে করে মাছ নিয়ে আসেন। সদরের হরিণা ফেরিঘাট থেকেও ইলিশ নিয়ে ঘাটে এসেছেন কয়েকজন পাইকারী মাছ ব্যবসায়ী।
[আরও পড়ুন: ভোট পর্যবেক্ষণে বিজেপির আমন্ত্রণে ভারতে আওয়ামি লিগের প্রতিনিধি দল]
ঘাটে মাছ নিয়ে আসা রাজরাজেশ্বর এলাকার মৎস্যজীবী মহম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, “দুই মাস ধরে মাছ আহরণ থেকে বিরত ছিলাম। এখন নদীতে নেমেছি। ইলিশ কম। কিছু চেওয়া মাছ পেয়েছি। ওই মাছ আড়তে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছি।”ওই এলাকার আরেক মৎস্যজীবী মহম্মদ সোলাইমান বলেন, চারজন নদীতে নেমেছিলেন ইলিশ ধরার জন্য। যে পরিমাণ ইলিশ পেয়েছেন, তা আকারে ছোট। তবে তা বিক্রি করে জ্বালানি ও নিজেদের খরচ উঠবে। হাজীগঞ্জ থেকে মাছ ঘাটে আসা ক্রেতা মহম্মদ মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, “দুই মাস পর আড়তে মাছ আসা শুরু হয়েছে। তবে পরিমাণে ইলিশ কম, দাম চড়া। যে কারণে ইলিশ কিনতে পারেনি। ইলিশের আমদানি বাড়লে তখন আবার আসব।”
মাছ ঘাটের একাধিক মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, অভিযানের সময়ে কিছু অসাধু মৎস্যজীবী গোপনে খোকা ইলিশ-সহ অন্যান্য মাছ ধরেছে। যে কারণে মাছের আমদানি কম। তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিলেও মাছ ধরা থেকে বিরত থাকেনি। মেসার্স লুৎফা আড়তের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন যেমন জানান, প্রথম দিনে ইলিশের আমদানি কম। যে কারণে দামও চড়া। এক কেজি ওজনের বেশি ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২০০ টাকায়। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকায়। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়।
[আরও পড়ুন: ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট বানিয়ে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব! উদ্বেগ বাড়ছে বাংলাদেশে]
আরেক মাছ ব্যবসায়ী ওমর ফারুক বলেন, এখন ঘাটে ইলিশের আমদানি কম। তবে অন্যান্য প্রজাতির মাছ আমদানি হয়েছে। চিংড়ি প্রতি কেজি এক হাজার থেকে শুরু করে ১ হাজার ৪০০ টাকায়, ছোট সাইজের চিংড়ি প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়, চেওয়া মাছ প্রতি কেজি ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদিকে, বড় সাইজের পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে শুরু করে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।