সুকুমার সরকার, ঢাকা: বন্যায় ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ। এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৪২ জনের। সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় এখনও বহু মানুষ আটকে রয়েছেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার কাজ চললেও সমস্ত জায়গায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
বুধবার স্বাস্থ্যদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বন্যা বিষয়ক এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ১৭ মে থেকে ২২ জুন পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮ জন, রংপুর বিভাগে তিন জন এবং সিলেট বিভাগে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন, সাপের কামড়ে একজন, বন্যার জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। একই সঙ্গে অন্যান্য কারণে ছ’জন মারা গিয়েছেন। জেলা ভিত্তিক মৃতের তালিকায় রয়েছে ময়মনসিংহে পাঁচজন, নেত্রকোনায় পাঁচজন, জামালপুর পাঁচজন, শেরপুরে তিনজন, লালমনিরহাট একজন, কুড়িগ্রামে দু’জন, সিলেট জেলায় ১৩ জন, সুনামগঞ্জে পাঁচজন ও মৌলভীবাজারে তিনজন।
[আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে লুকিয়ে জেহাদিরা, বাংলাদেশকে বিপাকে ফেলতে ষড়যন্ত্র পাকিস্তানের]
কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে বানভাসি বাংলাদেশের (Bangladesh) বিভিন্ন জেলা। বিশেষ করে মেঘালয়ে প্রবল বৃষ্টির জেরে প্রভাবিত হয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা। এছাড়া, উপকূলীয় এলাকাগুলিতে বর্ষার মরশুমে প্রতি বছরই ত্রাস হয়ে আসে নাগাড়ে বৃষ্টি। মঙ্গলবার প্লাবন বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। আর তারপরই বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনগুলিকে সতর্ক করলেন তিনি। তাঁর পরামর্শ, বন্যা বিরোধী পরিকাঠামোয় আরও জোর দিতে হবে। তা নাহলে মানুষকে প্রতি বছর এমন নরক যন্ত্রণায় ভুগতে হবে, যা কাম্য নয়।
উল্লেখ্য, উদ্ধারকাজ চললেও সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোণা-সহ একাধিক অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। দিনদিন তার আরও অবনতি হচ্ছে। চলতি বর্ষার মরশুমে বাড়তি বৃষ্টির জেরে। মঙ্গলবার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। ফেনি, কুমিল্লা, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম এলাকাতেও বন্যা পরিস্থিতি। যদিও প্রশাসন সূত্রে খবর, বন্যা মোকাবিলায় সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত তারা। সেনা, নৌসেনা, বায়ুসেনার তরফেও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্যাদুর্গত মানুষজনের নিরাপদ আশ্রয় ও ত্রাণ বিলিও হবে প্রয়োজনমতো।