সুকুমার সরকার, ঢাকা: অবশেষে নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের দাবানল। ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেল বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য। শুক্রবার থেকে অরণ্যের কোনও অংশে আগুন বা ধোঁয়া দেখা যায়নি। বিগত চারদিন ধরে দমকল, বন বিভাগ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আগুন সম্পূর্ণ নেভানো সম্ভব হয়।
[আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার অভিনন্দন বার্তায় আপ্লুত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, পালটা ধন্যবাদ জানালেন মমতা]
৩ মে অর্থাৎ গত সোমবার দাসের ভারানি এলাকার জঙ্গলে দাবানল দেখা যায়। বিধ্বংসী আগুনে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে বনাঞ্চল। এই ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বনবিভাগ। এদিকে, আগুন বনের সমতল ভূমিতে ছড়িয়ে পড়ে। জলের উৎস দূরে হওয়ায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয় দমকল ও বন বিভাগকে। প্রায় তিন মাইল দূরের ভোলা নদী থেকে পাম্প করে জল এনে চলে আগুন নেভানোর কাজ। দু’দিন চেষ্টার পর মঙ্গলবার একপশলা বৃষ্টিতে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। তবে বুধবার সকালে প্রথমবার আগুন লাগা স্থানের কিছুটা দক্ষিণে আবারও ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। বন বিভাগ ও দমকল সদস্যরা বুধ ও বৃহস্পতিবার দিনভর চেষ্টার পর ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই ঘটনার তদন্তে শরণখেলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা শরণখেলা স্টেশন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান ও ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মহম্মদ ফরিদুল ইসলাম। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে এ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়।
এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০ একরের মতো বনভূমি পুড়েছে বলে দাবি স্থানীয় লোকজনের। জেলে বা মধু সংগ্রহকারীদের অসাবধানতাবশত ফেলে যাওয়া বিড়ি বা সিগারেটের আগুন কিংবা মধু আহরণের সময় ধোঁয়া তৈরির জন্য দেওয়া আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে বনবিভাগ। তবে আসছে বর্ষায় মাছ ধরার জন্য বনে আগুন দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলেও ধারণা স্থানীয়দের একাংশের। স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত বলেও জানান তাঁরা।