সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু সেই বলিদান ভুলিয়ে দিতে ভারতবিরোধী অপপ্রচারে নেমেছে বেশ কয়েকটি পাকিস্তানপন্থী সংগঠন। এবার ‘রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে’ বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব হয়েছে ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’ নামের এমনই একটি সংগঠন।
সম্প্রতি বন্দরনগর চট্টগ্রামে জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, “শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারত সরকারকে সেটা করার অনুরোধ করেছি।” তাঁর কথায়, ”আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) আমাদের আদর্শ। তাঁকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে।” এরপরই বিদেশমন্ত্রী মোমেন বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। বলেন, ”অনেকে আমাকে ভারতের দালাল বলে। কারণ, অনেক কিছুই হয়, আমি স্ট্রং কোনও স্টেটমেন্ট দিই না।”
[আরও পড়ুন: ‘সংখ্যালঘু নয়, নিজেদের নাগরিক ভাবুন’, বাংলাদেশের হিন্দুদের পাশে দাঁড়িয়ে বার্তা হাসিনার]
এদিকে, মোমেনের বক্তব্যের পরেই শুরু হয় বিতর্ক। শুক্রবার ‘ইসলামি আন্দোলন দলটির আমির সৈয়দ মহম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অনতিবিলম্বে মন্ত্রিসভা থেকে বিদেশমন্ত্রীকে বহিষ্কার করে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ লঙ্ঘন, রাষ্ট্রদ্রোহ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে গ্রেপ্তার করার দাবি করেন। সংগঠনটির অভিযোগ, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া দলের পরবর্তী প্রজন্মই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বন্ধক রেখে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “একটি স্বাধীন দেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় কে টিকে থাকবে আর কে থাকবে না, তা নির্ধারণ করার পূর্ণ অধিকার সেই দেশের জনতার। বিদেশমন্ত্রী যখন অন্য কোনও দেশকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে যা যা করার তা করতে অনুরোধ করেন, তখন তা সুস্পষ্ট বাংলাদেশের মানুষের রক্তে কেনা সার্বভৌমত্বকে অন্যের হাতে অর্পণ করা হচ্ছে। বিদেশমন্ত্রী ভারত সরকারকে এই অনুরোধ করে জনগণের রক্তে কেনা অধিকারের সঙ্গে গাদ্দারি করেছেন। একই সঙ্গে তিনি রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছেন।”