সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলা চলচ্চিত্রের দিকপাল ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি ভেঙে ফেলছে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সাইকেল রাখার জন্য গ্যারেজ তৈরি করতে বাড়ির একটি অংশ ভেঙে তার ইট, সিমেন্ট ও সুড়কি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
রাজশাহীর মিঞাপাড়ায় অবস্থিত এই বাড়ি ভাঙার প্রতিবাদ জানিয়ে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে ১৩টি সাংস্কৃতিক সংগঠন। তারা দাবি জানিয়েছে, ঋত্বিকের শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের স্মৃতিবিজড়িত এই ভিটায় ঋত্বিক স্মৃতি জাদুঘর গড়ে তোলা হোক। ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ওই বাড়িতে শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের একটি অংশ কেটেছে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি ঋত্বিক কুমার ঘটকের। এখানে কিছু সময় বসবাস করেছেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীও।
[আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আইইডি বিস্ফোরণ, ছড়াল চাঞ্চল্য]
এই বাড়িতে থাকার সময়ই ঋত্বিক ঘটক রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়েছেন। তিনি রাজশাহী কলেজ এবং মিঞাপাড়ার সাধারণ গ্রন্থাগার মাঠে প্রখ্যাত সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে নাট্যচর্চা করেছেন। ঋত্বিক ঘটক সেসময় রাজশাহীতে ‘অভিধারা’ পত্রিকা সম্পাদন করেছেন। বিলুপ্ত কল্পনা হলের ‘ভাবীকাল’ নামে একটি চলচ্চিত্রের ব্যানারও এঁকেছেন।
উল্লেখ্য, সেনাপ্রধান থেকে দেশের ক্ষমতা দখল করে হুসেন মহম্মদ এরশাদ ১৯৮৯ সালে নামমাত্র মূল্যে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজকে বাড়িটি ইজারা দেন। সেটিই তারা এখন সম্পূর্ণ ব্যবহার করছে। বাড়িটির এক অংশে ইতিমধ্যে বহুতল ভবন করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। যেসব কক্ষে ঋত্বিকরা থাকতেন সেসব কক্ষও ব্যবহার করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারই এক অংশ ভেঙে অস্থায়ী সাইকেল গ্যারেজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। রাজশাহী থিয়েটারের প্রাক্তন সভাপতি কামারউল্লাহ সরকার বলেন, “ঋত্মিকের শেষ স্মৃতিচিহ্নটি ভেঙে ফেলছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এটা মেনে নেওয়া যায় না।” চলচ্চিত্র সংগঠক সাজ্জাক বকুল বলেন, “এটা নিন্দনীয়। দ্রুত নির্মাণকাজ বন্ধ করে ঋত্বিকের পৈতৃক ভিটা সংরক্ষণ করে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হোক। একই সঙ্গে এ ভিটায় ঋত্বিক ঘটক স্মৃতি জাদুঘরও গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছি আমরা।” রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহম্মদ শরিফুল হক জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে তারা ব্যবস্থা নেবেন।
The post ভাঙা হচ্ছে ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি, প্রতিবাদে সরব বাংলাদেশের সাহিত্যিক মহল appeared first on Sangbad Pratidin.