সুকুমার সরকার, ঢাকা: জ্বালানি জ্বালায় জর্জরিত বাংলাদেশ। পেট্রল, ডিজেলের দাম ছ্যাঁকা দিচ্ছে আম জনতার পকেটে। দেশবাসীর কাছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতের সাহায্যে ‘কম দামে’ রুশ তেল আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ঢাকা।
বাংলাদেশে (Bangladesh) অপরিশোধিত ও পরিশোধিত তেল রপ্তানির প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। গতকাল, বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটাস্কি এই প্রস্তাব দেন। তবে রাশিয়া থেকে সরাসরি জ্বালানি আমদানির কী কী পথ রয়েছে সেটা এখন খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ। পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছিলেন, জ্বালানি সঙ্কটজনিত দুর্ভোগ এড়াতে রাশিয়া থেকে কম দামে তেল কেনার সম্ভাব্যতা যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্ভাব্য বাণিজ্যিক ঝুঁকি এড়াতে রাশিয়া থেকে সরাসরি নয়, বরং তৃতীয় দেশের মাধ্যমে তেল কেনার বিষয়ে আগ্রহী বাংলাদেশ। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়ে প্রতিবেশী ভারতকেই তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পছন্দ।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি ভারত, জল্পনা উড়িয়ে জানাল বিদেশমন্ত্রক]
জ্বালানি মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভারত বর্তমানে রাশিয়া (Russia) থেকে তেল আমদানি করছে। অসমের নুমলিগড় তেল শোধনাগার থেকে পরিশোধিত তেল কেনার বিষয়ে দিল্লির সঙ্গে ঢাকার দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তি আছে। কম টাকায় রুশ তেল কেনার সম্ভাব্য ঝুঁকি এভাবে এড়ানো যেতে পারে। মস্কোভিত্তিক রুশ প্রতিষ্ঠান রুশনেফট পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম বিশেষ করে ডিজেল কম দামে বাংলাদেশের কাছে বিক্রির দেওয়ার প্রস্তাব দিলে এর সম্ভাব্যতা নিয়ে সম্প্রতি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা হয়। রুশ প্রতিষ্ঠানটি সরকারি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে প্রতি ব্যারেল পেট্রোলিয়াম ৫৯ ডলারে বিক্রির প্রস্তাব দেয়।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার। রুশ প্রতিষ্ঠানটি পরিবহণ খরচ-সহ পেট্রোলিয়াম এই মূল্যে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে জ্বালানি মন্ত্রক রুশ প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। জ্বালানিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। এখন পর্যন্ত রাশিয়া থেকে তেল কেনা এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রুবলের ব্যবহার নিয়ে বাংলাদেশ অনাগ্রহী ছিল। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র-সহ পশ্চিমা দেশগুলি রাশিয়ার তেল, গ্যাস-সহ বিভিন্ন খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কেনা ও ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেনকারীদেরও নিষেধাজ্ঞায় পড়ার ঝুঁকি থাকে।