সুকুমার সরকার, ঢাকা: আসন্ন জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বহু চর্চিত সামিটের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। আর দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনার প্রধান বিষয়ই হতে চলেছে তিস্তার জলবণ্টন। .
ঢাকার সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। ২০১৫ সালে মোদির ঢাকা সফরের সময়েই জল পাওয়ার ব্যাপারে চরম আশাবাদী ছিল হাসিনা সরকার। কিন্তু শেষ মূহুর্তে তা এগোয়নি। এবার দিল্লিতে হাসিনা-মোদির বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ঢাকার দিক থেকে তিস্তার জল বণ্টনটি প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছেন বিদেশসচিব মাসুদ বিন মোমেন। ‘রাষ্ট্রসংঘ জল সম্মেলন-২০২৩’ নিয়ে রবিবার আন্তঃমন্ত্রক বৈঠক শেষে বিদেশসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এদিন মোমেন বলেন, “রাজনৈতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ-ভারত সবসময়ই সর্বোচ্চ তিস্তা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছে। আমরা এটাকে সবসময় আলোচনার এজেন্ডায় রাখতাম। কারণ দুই দেশ পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে কাজ করতে মানসিকভাবে একমত। আমাদের ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। তিস্তার জল বণ্টনের ইস্যু আছে, যা প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই উত্থাপন করবেন। আমাদের আরও কিছু সমস্যা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “গঙ্গার জল চুক্তি আরেকটি বিষয়। যা শিগগিরই শেষ হয়ে যাবে। আমাদের অনেক জল আছে। এটা নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। কিন্তু আগামী পাঁচ বছর বা দশ বছর পর হয়ত দুশ্চিন্তার কারণ আসতে পারে। সেজন্য বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হবে। জনগণের মধ্যে সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে। আমাদের যে জলসম্পদ আছে, সেটিকে কীভাবে আরও ভালভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।”
[আরও পড়ুন: ‘দুর্দিনের বন্ধু’ বাংলাদেশকে ১৫ কোটি ডলার ফেরাল শ্রীলঙ্কা]
উল্লেখ্য, দীর্ঘ আলোচনার পর ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তি সই হয়। ৩০ বছরের চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। তাছাড়া, এবছরের শেষে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। বিএনপি, জামাতের মতো পাকপন্থী দলগুলি আসরে নেমে পড়েছে। জনতার একাংশের মধ্যে ভারত-বিরোধ ক্রমে বাড়ছে। তাই ‘ভারতপন্থী’ মুজিবকন্যার গদিতেও টান পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে তিস্তার জল নিয়ে যেতে পারলে হাসিনা যে অপাতত অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবেন তা বলাইবাহুল্য। আর নয়াদিল্লিও হাসিনাকেই মসনদে চাইছে। কারণ, বিএনপি ক্ষমতায় ফিরল ফের ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বাড়বে। তবে পশ্চিমবঙ্গের আপত্তির মাঝে আদৌ তিস্তার জল কি গড়াবে?