সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রাণনাশের আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর চাঞ্চল্যকর দাবি, বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের খুনিরা এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বাবার মতোই তাঁকে সরিয়ে দিতে চায় হত্যাকারীরা বলে জানিয়েছেন মুজিবকন্যা হাসিনা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডিতে বাড়িতে বঙ্গবধূ মুজিবর রহমানকে হত্যা করে সেনাবাহিনী। তবে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ছ’বছর পর দিল্লি থেকে দেশে ফেরেন হাসিনা। সেই ভয়াবহ দিনের কথা মনে করে হাসিনা বলেন, “১৫ আগস্ট আমার বাবার ঘাতকরা এখনো তৎপর।তারা আমাকে হত্যা ও বাবার হাতে গড়া দল আওয়ামি লিগকে নিশ্চিহ্ন করতে তৎপর। যে জাতির জন্য বঙ্গবন্ধু সারাটি জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, সেই বাঙালি হয়ে কীভাবে ঘাতকরা জাতির পিতার বুকে গুলি চালিয়েছিল!”
[আরও পড়ুন: হাসিনার প্রকল্পে স্বীকৃতি, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সাহায্যে এগিয়ে এল আমেরিকা ও কানাডা]
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন এবং শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিলেন হাসিনা। সেখানে তিনি বলেন, “আমার বাবা শিখিয়েছিলেন সাদাসিদে জীবন-যাপন করতে হবে। কাজেই ‘সিম্পল লিভিং হাই থিংকিং’, এটাই ছিল আমাদের মটো। এটাই আমাদের শিখিয়েছিলেন এবং আমরা সেটাই করতাম। সেদিন নিহত আমারভাই শেখ কামাল সব সময় অত্যন্ত সাদাসিদেভাবে চলাফেরা করত। তার পোশাক পরিচ্ছদ, জীবনযাত্রা খুবই সীমিত ছিল। এমনকি রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হিসেবে তাঁর কোনও অহংকার ছিল না।”
উল্লেখ্য, নিজের বক্তব্যে ইঙ্গিতে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি-কে নিশান করেছেন হাসিনা বলে করছেন বিশ্লেষকরা। আর আগেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হত্যায় খালেদা জড়িত বলে অভিযোগ করেছিলেন হাসিনা। শুধু তাই নয়, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির (BNP) প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ সরকার জিয়াকে ‘বীর উত্তম’ খেতাব দেয়। কিন্তু ‘বঙ্গবন্ধু’কে হত্যার চক্রান্তে জড়িত ছিলেন খোদ জিয়া। শেখ মুজিবর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পিছনে তদানীন্তন সেনাবাহিনীর উপপ্রধান কর্মকর্তা ও পরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman) প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।