সুকুমার সরকার, ঢাকা: ২০২১ সালে দুর্গাপুজোর সময় পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়িয়েছিল বাংলাদেশে (Bangladesh)। দেশের ১৮টি জেলায় পুজোমণ্ডপ, মন্দির, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলিতে মৌলবাদীরা হামলা চালিয়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতি করে। এতে কয়েকজন প্রাণও হারান। এবার সেসব ক্ষতিগ্রস্ত ৩১টি পুজোমণ্ডপ, মন্দির পুণর্নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) ত্রাণ তহবিল থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ দান করা হল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে খুশি সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়। পাশাপাশি, এ ধরনের সাম্প্রদায়িক অশান্তি থামাতে সরকারের আরও তৎপরতা আশা করেন বলেও জানান তাঁরা।
জানা গিয়েছে, একত্রিশটি দুর্গামণ্ডপ ও মন্দির নতুন করে তৈরির জন্য শেখ হাসিনার তহবিল থেকে ৪৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকে উদ্ধৃত করে সেখানে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত নোয়াখালি, কক্সবাজার ও কুমিল্লা জেলার মোট ৩১টি পূজামণ্ডপ, মন্দির ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান চেক পেয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকেও এ ধরনের সহযোগিতা মিলছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: গরু পাচার মামলায় অনুব্রতর আরজি খারিজ হাই কোর্টে, সিবিআই মোকাবিলায় এবার কী পদক্ষেপ?]
গত বছর দুর্গাপুজোর (Durga Puja) সময় বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি মন্দির, মণ্ডপ সাম্প্রদায়িক হামলার মুখে পড়ে। কুমিল্লার (Comilla) এক পুজোমণ্ডপে দুর্গাপ্রতিমার পায়ের কাছে ইসলামদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ‘কোরান’ রাখা নিয়ে অশান্তির সূত্রপাত। ইসলাম অবমাননার অভিযোগ পালটা নোয়াখালির এক মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়। তবে পরে কুমিল্লার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসে। তাতে দেখা যায়, সপ্তমীর রাতে কুমিল্লা শহরের নানুয়াদিঘি এলাকার একটি মসজিদ থেকে কোরান হাতে নিয়ে বেরয় এক ব্যক্তি। কিছুক্ষণ পর তাঁকে নানুয়াদিঘির পাড়ে দেখা যায়। তখন আর তার হাতে কোরানটি ছিল না। বরং হাতে ছিল হনুমানজির গদা। এই ছবিগুলি বিশ্লেষণ করে ইকবাল হোসেন নামে ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, মণ্ডপে কোরান রেখে অশান্তি বাধানোর ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। এই যুবককে গ্রেপ্তারও করা হয়।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করুন! টেলিগ্রামে ইউক্রেনীয় সেনাকে কেন এমন আরজি জেলেনস্কির?]
এরপর আবার জানুয়ারি মাসেও চট্টগ্রামের পূর্ব শাকপুরা এক মৃৎশিল্পীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ৩৫ টি সরস্বতী মূর্তি ভাঙচুর করে মৌলবাদীরা। সেই ঘটনাতেও তোলপাড় পড়ে যায়। বারবার প্রতিবেশী দেশটিতে সংখ্যালঘু হিন্দুরা এভাবে আক্রান্ত হওয়ায় নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়। সেই ক্ষতয় প্রলেপ দিতে হাসিনার এই পদক্ষেপ প্রশংসনীয় নিঃসন্দেহে।