সুকুমার সরকার, ঢাকা: স্বপ্নের কালনা সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার চামেলী হল থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সেতু উদ্বোধন করেন তিনি। বাংলাদেশের এটাই প্রথম ৬ লেনের সেতু। ব্রিজটির নাম ‘মধুমতী সেতু’ রাখা হলেও সবার কাছে এটি পরিচিত কালনা সেতু নামেই।
লোহাগড়ার কালনা পয়েন্টে মধুমতী নদীর উপরে এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর পূর্বদিকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলা এবং পশ্চিম পাড়ে লোহাগড়া। দেশের ১৮টি জেলার বাসিন্দাদের প্রত্যক্ষ সুবিধার পাশাপাশি কলকাতা ও ঢাকাকে আরও কাছে নিয়ে এল ব্রিজটি। ফরিদপুর ও নড়াইল জেলার মাঝে প্রবাহিত মধুমতী নদীর উপরে নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম ছয় লেনের দৃষ্টিনন্দন ‘মধুমতী সেতু’ বা কালনা সেতু। এর ফলে ঢাকার সঙ্গে কলকাতার দূরত্ব কমল প্রায় ১৫০ কিলোমিটর।
দৃষ্টিনন্দন করে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রথম ৬ লেনের সেতু। এটি এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। এই সেতু পদ্মার মিসিং লেন বলেও উল্লেখ করেছিলেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭.১০ মিটার। এর দু’ পাশের সংযোগকারী সড়ক প্রায় ৪ কিলোমিটার লম্বা। ৩০ মিটার প্রশস্ত।
[আরও পড়ুন: ‘বেলাশুরু’! ৫৩ বছরের নিঃসঙ্গ মায়ের সঙ্গী খুঁজে বিয়ে দিলেন সন্তানরা]
এই সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৯৫৯.৮৫ কোটি টাকা। ৬ লেনের মধ্যে চারটি দিয়ে দ্রুতগতির এবং বাকি দু’টি লেনে কমগতির যানবাহন চলাচল করবে। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এই সেতু চালু হলে ঢাকার সঙ্গে নড়াইল, বেনাপোল, যশোর, খুলনা-সহ আশপাশের সড়ক দূরত্ব অনেক কমে যাবে।
গত জুন মাসে পদ্মা সেতু (Padma Setu) নির্মাণের পর কালনা সেতুর উদ্বোধন পরিবহণ বিপ্লব এনেছে বাংলাদেশে। কালনা সেতুকে পদ্মাসেতুর ‘সিস্টার ব্রিজ’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। পদ্মা সেতু শুধু বাংলাদেশের জেলাগুলিকে ঢাকার কাছাকাছি এনেছে তা নয়, কলকাতার সঙ্গে ১৫০ কিলোমিটারে দূরত্বের পাশাপাশি সময় কমিয়েছে অন্তত ছ’ ঘণ্টা। আগে বাস, প্রাইভেট গাড়ি বা যে কোনও যানবাহন নিয়ে পদ্মা অতিক্রম করার জন্য ৬ ঘণ্টা ব্যয় হত। এখন সাড়ে ছ’ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু পেরোতে সময় লাগে মাত্র ছ’ মিনিট। পদ্মা সেতু থেকে ২০ কিলোমিটার দূরেই কালনা সেতু। ফরিদপুর-নড়াইল জেলার মাঝখানেই মধুমতী নদীর উপরে নির্মিত হয়েছে কালনা সেতু।
[আরও পড়ুন: মজার ছলে জঙ্গি দলে নাম লিখিয়ে বিপত্তি, র্যাবের হাতে আটক ৭ কলেজ পড়ুয়া]
এদিকে, আজ একই সময়ে নারায়ণগঞ্জে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারচুয়ালি এই সেতুটিও উদ্বোধন করেন। তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নারায়ণগঞ্জ শহর ও বন্দর উপজেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হল। সেতুটি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমানের নামে নামকরণ করা হয়েছে। এটি নারায়ণগঞ্জ শহরকে বন্দর উপজেলার সাথে সংযুক্ত করবে, অর্থনীতি চাঙ্গা করবে, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার মধ্যে যোগাযোগ সহজ করবে।