সুকুমার সরকার, ঢাকা: মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মাথার উপর ছাদ পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের (Bangladesh) সাঁওতালদের উপহার হিসেবে ঘর বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের সেই আশ্রয়ও দখল হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘর দখল হওয়ায় অন্যের বাড়ির উঠোনে কষ্ট করে দিন কাটাতে হচ্ছে সাঁওতাল (Tribal)সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের। দিনাজপুর (Dinajpur) সদর উপজেলার ফাজিলপুরের এই ঘটনা ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। সাঁওতালদের অভিযোগ, স্থানীয় চিলমন খানা দিঘির পাড়ের কয়েকটি মুসলমান (Muslim)) পরিবার তাঁদের ঘর দখল করা হচ্ছে। হুমকি দিয়ে উৎখাত করছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধার উপক্রম হয়েছে।
গত মঙ্গলবার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সাঁওতালরা অভিযোগ জানিয়েছিলেন। লিখিত অভিযোগে তাঁরা জানান, সরকারের কাছ থেকে ঘরের দলিল নেওয়ার পর ঘরে উঠতে গেলে স্থানীয় মুসলিমা সম্প্রদায়ের মানুষজন সাঁওতালদের হুমকি দেন, প্রাণনাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘরগুলি তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছে। যদিও ঘরের দলিল তাঁদের কাছে, কিন্তু ঘর দখলে রেখেছেন অন্যরা। বুধবার দুপুরে চিলমন খান দিঘির পারে সাঁওতালদের ওই আশ্রয় প্রকল্প এলাকা ঘুরে জানা গিয়েছে, ৯ একর জায়গাজুড়ে চিলমন খান দিঘি। দিঘির তিন ধারে আশ্রয় প্রকল্পের আওতায় ৫২টি সাঁওতাল পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। দিঘির পূর্ব দিকে অর্ধেকাংশে মুসলমানদের কবরস্থান। বাকি অংশে সাঁওতালদের কবরস্থান ও মন্দির। পাশেই প্রায় এক একর জায়গায় কোদাইলধোয়া দিঘি। ইতিমধ্যে ৪০টি ঘরে ৪০টি সাঁওতাল পরিবার বসবাস শুরু করেছে। তবে তৃতীয় পর্যায়ে বরাদ্দ করা ১২টি পরিবার বাধার মুখে ঘরে উঠতে পারছে না।
[আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে শক্তি বাড়াচ্ছে নিম্নচাপ, সপ্তাহান্তে মাটি হতে পারে পুজোর কেনাকাটি]
ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অভিজিৎ বসাক বলেন, উপজেলা থেকে চিলমন খান দিঘির পারে বসবাসকারী সাঁওতালদের জন্য ঘরগুলি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কয়েকজন গায়ের জোরে তাঁদের কয়েকটি ঘর দখল করে রেখেছে। যেহেতু তাঁরা সনাতনধর্মী, তাই বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। চিলমন খান দিঘির পারে আশ্রয় প্রকল্পের প্রথম ধাপে ৩০টি, দ্বিতীয় ধাপে ১০টি ও তৃতীয় ধাপে ১২টি সাঁওতাল পরিবারের জন্য উপহারের ঘর তৈরি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: অপ্রয়োজনে অপারেশন করলে মিলবে না স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা, বিজ্ঞপ্তি স্বাস্থ্য দপ্তরের]
স্থানীয় সাঁওতাল প্রতিনিধি রবেন মুর্মু বলেন, তিন পুরুষ ধরে চিলমন খান দিঘির পারসহ পাড়গাঁও গ্রামে শতাধিক সাঁওতাল পরিবার বসবাস করছে। এর মধ্যে দিঘির পারে ৩০টি পরিবারে ১৬৭ জনের বসবাস। সবার মাটির ঘর ছিল। বেশ কষ্টে ছিলেন তাঁরা। সরকার ঘর করে দেওয়ার পর কষ্ট কিছুটা দূর হয়েছে। ৪০টি পরিবার ঘরে উঠতে পারলেও বাকি ১২টি পরিবার উঠতে পারছে না। কবরস্থানের দোহাই দিয়ে মুসলমানদের কয়েকটি পরিবার ঘরগুলি দখল করে রেখেছে।