সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিতর্কের মাঝেই ফের এগারোশো রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরিত করল বাংলাদেশ (Bangladesh)। মঙ্গলবার কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্প থেকে সমুদ্রের মাঝে ওই বিচ্ছিন্ন দ্বীপের উদ্দেশে রওনা দেয় শরণার্থীদের দল।
[আরও পড়ুন: কর ফাঁকি দিচ্ছে চিনা সংস্থা, বিপুল আর্থিক লোকসানের মুখে বাংলাদেশ!]
প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ২০টি বাসে টেকনাফের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে তারা ভাসানচরে উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামে রওনা দেয় শরণার্থীরা। এদিন বিকেলে আরও একটি দল ভাসানচরের উদ্দেশ্যে উখিয়া ত্যাগ করে। রাতে চট্টগ্রামে রাখা হয় ওই শরণার্থীদের। বুধবার সেখান থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে করে ভাসানচরে পৌঁছে দেওয়া হয় তাদের। রোহিঙ্গাদের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা আর্মড পুলিশ ১৪ ব্যাটালিয়নের পুলিশ সুপার (এসপি) নাইমুল হক জানান, এবার ১৩ দফার প্রথম ধাপে প্রথম অংশে বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রামে রওনা দিয়েছে। অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন জানান, এবার ২ থেকে ৩ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
বলে রাখা ভাল, ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ১২ দফায় প্রায় ২৪ হাজার রোহিঙ্গাকে হাসিনা সরকারের উদ্যোগে ভাসানচরে পাঠানো হয়। এছাড়া গত বছরের মে মাসে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে সেখানে নিয়ে রাখা হয়। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মায়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে দেশটি থেকে প্রায় সাত লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সবমিলিয়ে মিলিয়ে এখন ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারে বসবাস করছে। ওই বছরের নভেম্বর মাসে কক্সবাজার থেকে এক লক্ষ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।
এদিকে, সমুদ্রের মাঝে ওই বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচড়ে থাকতে নারাজ রোহিঙ্গাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, ঝড়জল থেকে শুরু করে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে সেই দ্বীপে। রাষ্ট্রসংঘ এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়টি সুনজরে দেখছে না। কিন্তু সমস্ত আপত্তি উড়িয়ে শরণার্থীদের স্থানান্তরিত করতে বদ্ধপরিকর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার।