সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রচলিত সামাজিক পরিকাঠামোয় তাঁরা ব্রাত্য। তথাকথিত ‘ভদ্র সমাজ’ তাঁদের ছায়া মাড়াতে চায় না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও বৈষম্যের শিকার তাঁরা। এমনকী জাতীয় পরিচয়পত্রেও তাঁদের ‘পতিতা’ তকমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছুটা আশা জাগিয়ে এবার বাংলাদেশের (Bangladesh) যৌনকর্মীদের সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। আর সেই নতুন পরিচয়পত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ‘পতিতা’ শব্দটি।
[আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতি বছর জন্ম ৩৫ হাজার শিশুর! জনবিস্ফোরণের আশঙ্কা বাংলাদেশে]
জানা গিয়েছে, সোমবার ফরিদপুরে ২২ জন যৌনকর্মীকে সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। নতুন পরিচয়পত্রগুলি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ‘পতিতা’ শব্দটি। নতুন পরিচয়পত্রে ঠিকানার জায়গায় ‘রথখোলা পল্লি’ লেখা হয়েছে। সার্ভারে থাকা পেশার তথ্যের জায়গায় সংশোধন করে ‘গৃহিণী’ লেখা হয়েছে। শাপলা মহিলা সংস্থা নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির চেষ্টায় ফরিদপুর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের উদ্যোগে এ সংশোধিত পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়।
নির্বাচন আধিকারিকের কার্যালয়ে এই কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মহম্মদ হাবিবুর রহমান, ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মহম্মদ নূরু আমিন, শিশুসুরক্ষা কমিটির সদস্য ও শাপলা মহিলা সংস্থার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শিপ্রা গোস্বামী প্রমুখ।
এই বিষয়ে যৌনকর্মীদের বক্তব্য, তাঁরা বরাবরই বৈষম্যের শিকার। আর এটা অনেকটা গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। তাঁরা ভাগ্যের বিড়ম্বনায় সমাজে নিগৃহীত একটি পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু তাঁদের সন্তানরা যেন মায়ের পেশায় না আসে। এ জন্য তাঁরা শিশুদের পড়াশোনা সিকিয়ে মানুষ করতে আগ্রহী। কিন্তু স্কুলে ভরতি, বার্থ সার্টিফিকেট-সহ নানা কাজে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়। এ জন্য সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁরা উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েছিলেন। সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার পর এই জাতীয় সমস্যা ও সম্মানহানিকর পরিস্থিতির অবসান হবে বলে তাঁরা মনে করেন।