সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে বাংলাদেশ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই গণহত্যার মামলা রুজু করা হয়েছে সেদেশে। জানা গিয়েছে, সেই মামলার বিচারের জন্যই হাসিনাকে দেশে প্রত্যর্পণের ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রাইম আদালতের সদ্যনিযুক্ত প্রধান আইনজীবী তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে সেদেশের প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। সেই চুক্তির বলেই হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর ব্যবস্থা হবে বলে তাঁর দাবি।
ঢাকায় আন্তর্জাতিক ক্রাইম আদালতে দাঁড়িয়ে তাজুল বলেন, "আমরা আদালতে আবেদন জানাব, যেন শেখ হাসিনা-সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গণহত্যা এবং জনতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে বিচার হবে তাঁদের বিরুদ্ধে।" তাজুলের মতে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতাতেই দেশে ফেরানো হবে হাসিনাকে। উল্লেখ্য, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সারা দেশের বিভিন্ন থানায় ৫০ টি হত্যামামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে সাতটি।
[আরও পড়ুন: ‘পরিবারে যারা ভাঙন ধরায়…’, জনসভায় ‘ক্ষমাপ্রার্থী’ অজিত, ফিরছেন শরদ শিবিরে?]
তবে বাংলাদেশের এই অবস্থানের জেরে চাপ বাড়ছে নয়াদিল্লির উপরে। কারণ হাসিনাকে দেশে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে কূটনৈতিক দিক থেকে উভয় সংকটে পড়েছে ভারত। হাসিনার সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক। রাজনৈতিকভাবেও বরাবর মুজিবকন্যার দিকেই ঝুঁকে থেকেছে নয়াদিল্লি। চিন এবং পাকিস্তানের প্রভাব থেকে প্রতিবেশী বাংলাদেশকে যেন মুক্ত রাখা যায়, সেই জন্য হাসিনার উপরেই বরাবর ভরসা রেখেছে ভারত। দীর্ঘদিনের সেই বন্ধুত্বের কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশে আওয়ামি লিগ সরকার পতনের পর ভারত হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত নিরাপদে ভারতেই রয়েছেন মুজিবকন্যা।
কিন্তু ভারতের এহেন অবস্থানে অখুশি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যদিও প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বিবাদ এড়াতে চায় নয়াদিল্লি। মহম্মদ ইউনুস সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতেও চেষ্টা করছে ভারত। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের দাবি মেনে হাসিনাকে প্রত্যর্পণ না করলে ইউনুস সরকার চটে যাবে ভারতের উপর। আবার হাসিনাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিলে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে বলেও ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতের পদক্ষেপ কী হবে, সেদিকে নজর থাকবে আন্তর্জাতিক মহলের।