সুকুমার সরকর, ঢাকা: দুর্গাপুজোয় নাশকতার চেষ্টা করতে পারে সন্ত্রাসবাদীরা। ফের এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মহম্মদ শফিকুল ইসলাম। এর আগে গত বুধবার দেশের বিভিন্ন পুজোমণ্ডপে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এবার তিনি জানিয়েছেন, পুজোয় হামলার জন্য তৈরি হয়েছে ৫০ জন জঙ্গি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার পুজোমণ্ডপে নাশকতার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পুলিশকর্মীদের সতর্ক থাকার বার্তা দিয়ে মহম্মদ শফিকুল ইসলাম স্পষ্ট জানিয়েছেন, রাজনীতির নামে সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ালে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, “আমরা জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ করতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কারণ, বেশ কিছু পুজোমণ্ডপ ঝুঁকিতে রয়েছে।” প্রসঙ্গত, গত বছর দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) গুজব ছড়িয়ে দেশের ১৮ জেলায় হিন্দুদের বাড়ি-ঘর, মন্দির ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ, হামলা চালানোর পাশাপাশি লুটপাট করা হয়। মারাও যান বেশ কয়েকজন।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষা করে, কিন্তু রোহিঙ্গাদের যেতে হবে, আমেরিকায় বার্তা হাসিনার]
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার ইসলাম বলেন, “আমাদের কাছে তথ্য আছে, ৫০ জন জঙ্গি হামলার জন্য তৈরি হয়েছে। তারা বিভিন্ন পুজোমণ্ডপে হামলার জন্য ট্রেনিং নিয়েছে। এগুলোর ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।” ডিএমপি কমিশনার বলেন, “পুজোয় কোনও হিংসার ঘটনার আগে গোয়েন্দা তথ্য আমাদের থাকবে। যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পুজোমণ্ডপে আমাদের কন্ট্রোল রুম-সহ সব জায়গায় আলাদা ফোর্স মোতায়েন থাকবে। পুজোয় কোনও ধরনের নাশকতা যাতে না ঘটে সেই বিষয়ে খেয়াল রেখে আমরা কাজ করছি। তারপরেও কোথাও হামলা হলে সেটি মোকাবিলার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। জঙ্গিরা এখন অনলাইনে সক্রিয়। তারা নানা ধরনের পোস্ট দিচ্ছে। লোন উলফ হামলায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে অনেকে, অন্যকে উদ্বুদ্ধ করছে। কেউ তাদের পোস্ট দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছে, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আমরা অ্যালার্ট আছি।”
এদিকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির বার্তা দিয়েছেন আওয়ামি লিগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমরা সবাই একসঙ্গে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। তখন কে হিন্দু, কে মুসলিম সেই ভেদাভেদ ছিল না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের (Bangladesh) জন্ম। আজও আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখেছি। ধর্মের দিক থেকে আমরা কেউ মুসলিম, কেউ হিন্দু। কিন্তু মনের দিক থেকে সবাই এক। আমাদের ইদে হিন্দু ভাইরা আসেন। তাদের পুজোয় আমরা যাই। আমাদের মাঝে কোনও ভেদাভেদ নেই।” বৃহস্পতিবার দুপুরে ভোলা জেলা পুজো উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।