সুকুমার সরকার, ঢাকা: চিনা ঋণের ফাঁদে পড়ে নাজেহাল শ্রীলঙ্কা। মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। এহেন পরিস্থিতিতে বেজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ঢাকা। কোনওভাবেই যাতে ঋণের ফাঁদে না পড়ে দেশ, তা নিশ্চিত করতে সমস্ত পদক্ষেপ করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার।
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের অন্তর্গত পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলিতে পরিকাঠামো নির্মাণ করছে চিন (China)। বিপুল ঋণের পসরা সাজিয়ে ফাঁদ পেতেছে দেশটি। বিশ্লেষকদের মতে, বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে অলাভজনক বেশ কয়েকটি প্রকল্প গড়ে তুলেছে ইসলামাবাদ ও কলম্বো। যার পরিণাম এবার হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে তারা। ঋণ মেটাতে গিয়ে কার্যত দেউলিয়া হয়ছে ওই দুই দেশ। বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার ‘গড়ের মাঠ’ হওয়ায় আমদানি থমকে গিয়ে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে মারাত্মক হারে। তাই এবার চিনের সঙ্গে বাণিজ্য করতে গিয়ে অত্যন্ত মেপে পা ফেলছে বাংলাদেশ (Bangladesh)।
[আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ড কন্টেনার ডিপোয় অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে নাশকতা! ইঙ্গিত বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রীর]
বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ সূত্রের খবর, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, ‘হাই স্পিড’ রেল সংযোগ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে চাইছে চিন। কিন্তু অর্থনীতির কথা মাথায় রেখে তা কার্যত বাতিল করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চিনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই দুই এলাকার মধ্যে যে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন রয়েছে, তা যথেষ্টই কার্যকর। প্রায় এক হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করে সেখানে ‘হাই স্পিড’ রেল চালালে বাংলাদেশের বিশেষ লাভ নেই। বিষয়টি কতটা বাস্তবসম্মত এবং তার উপযোগিতা কতটা, তা নিয়ে একটি সমীক্ষা করে চিনকে বারণ করে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এই নিয়ে এখনও হাল ছাড়েনি বেজিং। সেই দেশে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত লি জিমলিং এই প্রকল্পের চুক্তিপত্র সই করার জন্য বাংলাদেশের সরকারকে সম্প্রতি তাগাদা দিয়েছেন বলে খবর।
উল্লেখ্য, ভারত উপমহাদেশে কৌশলগত অবস্থান মজবুত করছে চিন (China)। সেই উদ্দেশ্য পূরণ করতে বাংলাদেশকে বাগে আনতে মরিয়া জিনপিং প্রশাসন। আর কার্যসিদ্ধিতে কমিউনিস্ট দেশটির হাতিয়ার ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্প (OBOR)। জানা গিয়েছে, এবার সেই প্রকল্পের অন্তর্গত বাংলাদেশে পরিকাঠামো নির্মাণ করতে চায় চিন। ২০১৬ সালে চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পে যোগ দেয় বাংলাদেশ। সেই চুক্তি মতে, হাইওয়ে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে ঢাকাকে ১.১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক মদত দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে শি জিনপিং প্রশাসন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, চিন আগ্রহ প্রকাশ করলেও এই প্রকল্প নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আগ্রহ প্রকাশ করেনি হাসিনা সরকার।