সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জমানা বদলের পর নিকটতম প্রতিবেশী দেশে যেভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধারাবাহিক ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, তাতে আঙুল উঠছে সেখানকার অন্তর্বর্তী সরকারের দিকেই। বলা হচ্ছে বাংলাদেশের কথা। গত আগস্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর আপাতত সেখানে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার। আর তাদের শাসনে মোটেই সুরক্ষিত নয় হিন্দু, খ্রিস্টানদের মতো সংখ্যালঘুরা। লাগাতার তাঁদের উপর হামলা চলছে। যদিও ইউনুসের দাবি, এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কোনও সাম্প্রদায়িক অশান্তি নয়, বরং রাজনৈতিক কারণ কিংবা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের শিকার হতে হচ্ছে হিন্দুদের। কিন্তু তাঁর এই দাবি একেবারে ফুৎকারে উড়িয়ে দিলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে হাসিনার বক্তব্য, ''মোটেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সেখানে মৌলবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়েছে এবং নির্দিষ্ট নিশানা করেই সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চলছে।''
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের জেরে গদিচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা আপাতত ভারতের 'রাজনৈতিক আশ্রয়ে' রয়েছেন। গণহত্যার অপরাধে তাঁর বিচার শেষ হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে। আগামী সোমবার, ১৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা হবে হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হওয়ার সত্ত্বেও নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে আওয়ামি লিগ। বৃহস্পতিতে লকডাউন, রবিতে শাটডাউনের ডাক দিয়েছে। এমনই টালমাটাল সময়ে এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ফের ইউনুস একের পর একে তোপে বিঁধেছেন মুজিবকন্যা।
হাসিনার স্পষ্ট বক্তব্য, ''আমার শাসনকালে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সর্বোচ্চ সুরক্ষা এবং তাঁদের বিশ্বাস অটুট রাখতে আমরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছিলাম। বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার আবহ ছিল, গণতন্ত্রের মধ্যে বৈচিত্র্য ছিল। কিন্তু এখন ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সেখানে ভয়ে ভয়ে বাস কেন। তাঁদের মন্দিরে হামলা হচ্ছে, দোকানপাটে লুট চলছে, পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এখনকার অন্তর্বর্তী সরকার তাঁদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। আমি বলতে চাই, ইউনুস সরকার হিন্দুদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করছে।'' আগেও একই অভিযোগ শোনা গিয়েছিল হাসিনার গলায়। তবে এবার তাঁর বক্তব্য আরও চাঁচাছোলা, সুনির্দিষ্ট।
