সুকুমার সরকার, ঢাকা: চিনা চিকিৎসকদের চেষ্টা ব্যর্থ! বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার (Khaleda Zia) স্বাস্থ্যের কোনও উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে শেষমেশ চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত অথবা শুক্রবার ভোরে লন্ডন উড়িয়ে নিয়ে নেওয়া হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে তাঁকে লন্ডনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ দুপুর তিনটে নাগাদ ঢাকার হাসপাতালে সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ হোসেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের সুচিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স দিয়ে সহযোগিতা করবে কাতার। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কাতারের পক্ষ থেকে আজ সকালে বিএনপিকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পাঠাতে প্রস্তুত কাতার। ঢাকার কাতার দূতাবাসের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে সহযোগিতার জন্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির চিঠি লিখেছিলেন। সেসময় কাতার ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই সহযোগিতার কথা জানিয়েছে ঢাকার কাতার দূতাবাস।
এদিকে, হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অধ্যাপক শাহবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। অন্যদিকে, বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছেছেন লন্ডনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বিল। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, রিচার্ড বিল বর্তমানে ওই হাসপাতালে রয়েছেন। তিনি বেগম জিয়ার সর্বশেষ পরীক্ষানিরীক্ষার রিপোর্ট খতিয়ে দেখেছেন। বিএনপি-র একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, সেটা কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে হৃদযন্ত্রে জটিলতা রয়েছে। বাকি সমস্যাগুলো অনেকটাই অপরিবর্তিত।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারি মাসে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রথমে হাসপাতালে, পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা করান। প্রায় চারমাস পর গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে ঢাকার ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষায় ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়। গত রবিবার ভোরের দিকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এসডিইউ থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। এবার তাঁকে ফের লন্ডন উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে।
