সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর প্রাথমিক ভাবে এই ধারণা জোরালো হয়েছিল যে, এ বার খালেদা জিয়ার দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি-ই (বিএনপি) ক্ষমতায় আসতে চলেছে। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পরিস্থিতি বদলেছে! ভোটের ময়দানে এখন সমানে সমানে লড়ছে জামাত-ই-ইসলামি। শুধু তাই নয়, আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি-কে হারিয়ে তারা ক্ষমতায় চলেও আসতে পারে বলে দাবি করল একটি মার্কিন সংস্থা।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে ভোট (Bangladesh Election)। স্বাভাবিক ভাবে তাতে লড়ছে না 'নিষিদ্ধ' ঘোষণা হওয়া আওয়ামি লিগ (হাসিনার দল)। ফলে লড়াই মূলত বিএনপি এবং জামাতের মধ্যে। মার্কিন সংস্থা 'ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট' জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের ভোট নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা নির্বাচনে সম্ভবত বিএনপি-কেই ভোট দেবেন। আর ২৯ শতাংশ জামাতকে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। গত ২ নভেম্বর এই সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মার্কিন সংস্থাটি। তাদের দাবি, এই ফলাফল যে কোনও সময়েই উল্টে যেতে পারে। কারণ, সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৫৩ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা জামাতকে পছন্দ করেন। আর বিএনপি-কে পছন্দ করেন ৫১ শতাংশ। প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও জিতেছিল জামাতের ছাত্র সংগঠন 'ইসলামি ছাত্র শিবির'।
বাংলাদেশের নির্বাচনে বিএনপি-কে হারিয়ে যদি সত্যিই জামাত ক্ষমতায় আসে, তা খানিক 'চমক'ই হবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা। যদিও চিরাচরিত সমীকরণ এর আগেও আমূল পালটেছে পদ্মাপারে। ২০০১ সালের ভোটেও একই ভাবে ক্ষমতায় এসেছিল খালেদার দল। আওয়ামি লিগের জয় নিয়ে প্রত্যাশায় জল ঢেলে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৯৩ আসনে জিতেছিল তারা। তবে ব্যালট বাক্সে জামাত কোনওকালেই নিজের জোরালো উপস্থিতি জাহির করতে পারেনি।
গত বছর কোটা আন্দোলনকে ঘিরে দানা বাঁধা জনবিক্ষোভের জেরে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তার পর থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি-র পুনরুত্থান শুরু। একই সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হতে শুরু করে জামাতও। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে আন্তর্জাতিক মহলের বিশ্বাস ছিল, ভোট হলে বিএনপি-ই ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে জামাতের প্রভাব যে ভাবে বেড়েছে, তাতে খানিক আশঙ্কিতই খালেদার দল। একাধিক বিযয়ে জামাতের সঙ্গে প্রকাশ্যে মতবিরোধে জড়িয়েছে খালেদার দল। পাশাপাশি, বিএনপি-র ভোটবাক্সে থাবা বসিয়ে 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'-এর নেতা নাহিদ ইসলামেরাও একটি দল গড়েছেন। সেটির নাম জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নির্বাচনে তারাও লড়বে। ফলে ভোট ভাগাভাগির অঙ্ক থাকছেই। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সংঘবদ্ধ ভাবে গোটা প্রক্রিয়া প্রভাবিত করার মতো ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র জামাতের হাতে।
