shono
Advertisement
Bangladesh

আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ঘোষণা সেনাপ্রধানের, ফের এক সামরিক অভ্যুত্থান দেখবে 'নতুন' বাংলাদেশ?

বাংলাদেশে এখন চরম অরাজকতা। দিকে দিকে খুন, ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন লাগামচারা হারে বেড়ে গিয়েছে।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 05:30 PM Feb 25, 2025Updated: 05:40 PM Feb 25, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্ষমতায় এসে নানা সংস্কার করে 'নতুন' বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মহম্মদ ইউনুস। কিন্তু সেই বদলের বাংলাদেশেই এখন চরম অরাজকতা। নিপীড়নের শিকার হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুরা। দিকে দিকে খুন, ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন লাগামচারা হারে বেড়ে গিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছতে চলছে 'ধ্বংসযজ্ঞ' চলছে নানা প্রান্তে। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মুজিবের বাড়ি। মাথাছাড়া দিচ্ছে হিজবুত তাহরির মতো সন্ত্রাসী সংগঠন। এই পরিস্থিতে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। জানালেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ভার কাঁধে তুলে নেবে সেনাবাহিনী। তাহলে কী ফের এক সেনা অভ্যুত্থান দেখবে বাংলাদেশ? 

Advertisement

গত বছরের জুলাই মাসে সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' নামে পড়ুয়াদের একটি সংগঠন পথে নামে। জামাতের উসকানিতে তাদের সেই আন্দোলন হিংসাত্মক রূপ নেয়। গদি হারিয়ে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলে ক্ষমতায় আসে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সঙ্গে দাপাদাপি বাড়ে জামাতেরও। সরকারের নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে এখন তাদের নেতারাই রয়েছে। দিকে দিকে বাড়বাড়ন্ত মৌলবাদীদের। দেশে যে হারে অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে তাতে উদ্বিগ্ন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। গতকাল সোমবার বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "যতদিন না বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত আমিই সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করব। আগামী দিনে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সেনা নেবে।"

দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে ছাত্র-জনতা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধান আরও বলেন, "আমরা প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলাম এই সব কাজ তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। আমরা ব্যারাকে ফিরে যাব। কিন্তু এখন দেখছি আমাদেরই কাজ করতে হবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছি। কিন্তু এখন আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে এবং সম্পূর্ণ নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে।" বিশ্লেষকদের মতে, সেনাপ্রধানের এহেন মন্তব্যে ইউনুসেরই চিন্তা বাড়বে। আগামী দিনে ফের আরেক সেনা অভ্যুত্থান হতেই পারে বাংলাদেশে।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই বেশ কয়েকবারই সামরিক অভ্যুত্থানের সম্মুখীন হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। যে তালিকার শুরুতেই রয়েছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। তৎকালীন মেজর শরিফুল হক (ডালিম) বীর উত্তম, মেজর সৈয়দ ফারুক রহমান এবং মেজর রশিদের নেতৃত্বে প্রথমবার সেনা অভ্যুত্থান হয় বাংলাদেশে। এই অভ্যুত্থানেরই ফলশ্রুতি বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের হত্যা। খুন হতে হয় তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদেরও। কেবল দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সেই সময় জার্মানিতে থাকার কারণে তাঁরা বেঁচে যান। সেবারের অভ্যুত্থানে প্রাণ যায় কয়েকজন মন্ত্রী ও আওয়ামি লিগের নেতাদেরও।

সেই অভ্যুত্থানের আড়াই মাস পরই ৩ নভেম্বর সেনার গড়া সরকারও ভেঙে যায় আরও এক অভ্যুত্থানে। এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ছিলেন জেনারেল খালেদ মোশারফ বীর উত্তম। বন্দি করা হয় সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। কিন্তু তা চারদিনের বেশি স্থায়ী হয়নি। ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমানকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে মুক্ত করে ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্যরা। খুন হন খালেদ মোশারফ।

জিয়াউর রহমান ২১টি অভ্যুত্থানের মুখোমুখি হয়েছিলেন। কিন্তু পাঁচ বছরের শাসনকালে সেগুলো সামাল দিতে পারলেও ২২ নম্বর অভ্যুত্থানে মারা যান তিনি। ১৯৮১ সালের ৩০ মে তাঁর মৃত্যুর পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন আব্দুস সাত্তার। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ আব্দুস সাত্তারের সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে নেন সেই সময় সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থাকা প্রধান লেফটেন্য়ান্ট জেনারেল হুসেন মহম্মদ এরশাদ। ১৯৯১ সালে তাঁর পতনের পর বাংলাদেশে ফের নির্বাচন ব্যবস্থা ফিরে আসে। এরপর বেশ কয়েকটি সেনা অভ্যুত্থানে রক্ত ঝরেছে বাংলাদেশে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ক্ষমতায় এসে নানা সংস্কার করে 'নতুন' বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মহম্মদ ইউনুস।
  • কিন্তু সেই বদলের বাংলাদেশেই এখন চরম অরাজকতা। নিপীড়নের শিকার হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুরা।
  • দিকে দিকে খুন, ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন লাগামচারা হারে বেড়ে গিয়েছে।
Advertisement